জিকা: শিশুরা ভুগছে চোখের সমস্যায়ও

ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের প্রভাবে অস্বাভাবিক ছোট মাথা এবং অপরিণত ব্রেন নিয়ে জন্মানো শিশুরা চোখেরও মারাত্মক সমস্যায় ভুগছে। তাদের শ্রবণ যন্ত্রেও সমস্যা আছে বলেই ধারণা করছেন চিকিৎসকরা।

চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ক্যামিলা ভেন্তুরা বলেন, ব্রাজিলের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শহরের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা অস্বাভাবিক ছোট মাথার ১৩৫টি শিশুর অর্ধেকেরও বেশিজনের চোখের অপটিক নার্ভ ও রেটিনা সম্পূর্ণরূপে গঠিত না হওয়ার তাদের দৃষ্টিশক্তি অত্যন্ত কম। এছাড়া অধিকাংশের চোখ টেরা।

“তাদের চোখ জন্ম থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত। এদের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের দৃষ্টিশক্তিতে মারাত্মক জটিলতা রয়েছে।”

গত বছর মে মাস থেকে ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের প্রদুর্ভাব শুরু হয়। তারপর থেকে দেশটিতে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে শিশু জন্মানোর হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।

জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর গত বছর অক্টোবর থেকে ব্রাজিলে ৩,৮৯৩টি শিশু ছোট মস্তিষ্ক নিয়ে জন্ম গ্রহণ করার খবর পাওয়া গেছে।

যেখানে আগে একই সময়ে মাত্র ১৬০টি শিশু এ ধরনের সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করত।

 

চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এর সঙ্গে জিকা ভাইরাসের সম্পর্ক থাকতে পারে। যদিও বিষয়টি পরীক্ষার মাধ্যমে এখনও প্রমাণিত নয়।

শিশুদের অস্বাভাবিক ছোট মাথার সমস্যাকে ‘মাইক্রোসেফালি’ বলে। এসব শিশুদের মস্তিষ্কের গঠন সম্পূর্ণরূপে হয় না। ফলে শিশুরা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। এমনকি তাদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, শুধু ব্রাজিল নয় বরং পুরো আমেরিকা মহাদেশে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে গেছে। এরই মধ্যে ক্যারিবিয়ান এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার ২১টি দেশে জিকা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে।

বেশ কয়েকটি দেশের সরকার এ সময় নারীদের গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

মূলত এডিস মশা জিকা ভাইরাসের বিস্তার ঘটায়। ডেঙ্গু ভাইরাস বিস্তারের পেছনেও এডিস মশা দায়ী।

জিকা ভাইরাস বহনকারী পাঁচ জনের মধ্যে একজনের দেহে এর উপসর্গ দেখা দেয়। মাঝারি মাত্রার জ্বর, চোখে প্রদাহ এবং মাথা ব্যাথা এই রোগের উপসর্গ।

এ রোগের কোনো টিকা বা চিকিৎসা নেই। সচেতনতাই একমাত্র প্রতিকার।

জিকা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ব্রাজিল সরকার দুই লাখ ২০ হাজার সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনগণকে জিকা ভাইরাস সম্পর্কে করণীয় জানাবে।