গ্রামকে শহর বানাতে যাবেন না : নসরুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আমাদের একটি ধারণা রয়েছে যে, গ্রামকে শহর বানাতে হবে। সংবিধানের ১৬ নং অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, সবার জন্য বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেননি যে, গ্রামকে শহর বানাতে হবে। সুতরাং সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ, গ্রামকে শহর বানাতে যাবেন না।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর এবং ফেডারেল ইন্সটিটিউট ফর জিওসায়েন্সেস অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোসের্স (বিজিআর), জার্মানি কর্তৃক আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভোলায় আমাদের সব থেকে বড় অবকাঠামো হচ্ছে। আমরা সেখানে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য খনন করেছি। এছাড়াও মাতারবাড়ির বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সময় ল্যান্ড ডেভলেপমেন্টের জন্য ২০০ কোটি ডলার অতিরিক্ত খরচ কর‍তে হয়েছে। কারণ জিও ইনফরমেশন পাওয়ার পর বুঝতে পারলাম পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের জন্য এ জায়গাটা খুবই দুর্বল। সুতরাং যে কোনো অবকাঠামো তৈরি করার সময় ওই স্থানের জিও ইনফরমেশন জানা গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, আমরা যদি পুরো দেশের ডিটেইল মাস্টারপ্ল্যান করতে চাই, কোথায় কৃষি অঞ্চল হবে, কোথায় ডেভেলপমেন্ট হবে, নদী-খাল বিলগুলোকে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, সে দায়িত্ব কিন্তু ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরকেই গ্রহণ করতে হবে। ভূপৃষ্ঠের নিচের অনেক আবিষ্কার জিএসবি করেছে। দেশের নদীতীরের বালিতে অনেক খনিজ সম্পদের সম্ভবনা রয়েছে। জিএসবি এখন যমুনা ও ব্রক্ষ্মপুত্রের নদীর বালু নিয়ে কাজ করছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নগরায়ন কিন্তু ধীরে ধীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। নীচু জমিগুলো ভরাট করে প্লট বানানো হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কি জিও ইনফরমেশন রিপোর্ট নিয়ে কাজ করা হয়েছে? আমি মনে করি, দেশে যে কয়টি অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে, সব ক্ষেত্রে জিএসবির জিও ইনফরমেশন রিপোর্ট নিয়ে কাজ করা উচিত।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব হোসেন, জার্মান অ্যাম্বাসেডর আচিম ত্রোসা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাজী ওয়াসি উদ্দিন প্রমুখ।

‘জিওইনফরমেশন ফর আরবান প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডাপটেশন টু ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের ৪টি এলাকার বিভিন্ন কারিগরি মানচিত্র যেমন ভূ-প্রাকৃতিক, ভূ-প্রকৌশল, প্লাবন, নদীর গতিপথ পরিবর্তন শনাক্তকরণ, অবকাঠামো উন্নয়ন উপযুক্ততা মানচিত্রায়ন ও নগর পরিকল্পনার সহায়ক বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল মানচিত্র ও তথ্যভাণ্ডার প্রস্তুত করার লক্ষ্যে ভূপৃষ্ঠ ও ভূ নিম্নস্থ মাটির বিস্তারিত ভূতাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহ, ভূ প্রকৌশল কূপ খনন ও অন্যান্য জরিপের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।