গোপালগঞ্জে ভাসমান বেডে তরমুজ চাষে সাফল্য

গোপালগঞ্জ সংবাদাদাতা: প্রথম বারের মতো আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে ভাসমান বেডে তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা।

কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ‘বেঙ্গল টাইগার-১’ ও ‘বেঙ্গল টাইগার-২’ জাতের তরমুজ বীজ ভাসমান বেডে আবাদ করে কৃষক এ বছর প্রথম তরমুজ উৎপাদন করেছে।
এর মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জে কৃষকের ভাসমান মাচায় তরমুজ চাষে এ বছরই ‘প্রথম সাফল্য’ এসেছে বলে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন।
এ সাফল্যে ভাসমান বেডে চাষাবাদে আরও বেশি লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।

গোপালগঞ্জ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মহসীন হাওলাদার জানান, ভাসমান বেডে সবজি, মসলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয় করণ প্রকল্পের আওতায় এ বছর প্রথম গোপালগঞ্জে ২’শ কৃষক অন্তত এক হাজার ভাসমান বেডে তরমুজের চাষ করেন।

“প্রতিটি বেডেই তরমুজের আশানুরূপ ফলন হয়েছে।”

তিনি বলেন, আমরা ভাসমান বেডের কৃষিকে আরও লাভজনক কৃষিতে পরিণত করতে চাই। তাই এ কৃষিতে নতুন নতুন উচ্চ মূল্যের ফসল উৎপাদনে কৃষককে উৎসাহিত করছি। তেমনই একটি উচ্চ মূল্যের ফসল তরমুজ।

“একটি কদু বিক্রি করে যেখানে কৃষক ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পান। সেখানে একটি তরমুজ বিক্রি করে কৃষক একশ থেকে দুইশ টাকা পাচ্ছেন। এতে কৃষকের আয় বাড়ছে।”
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার মিত্রডাঙ্গা গ্রামের কৃষক জানায়, তারা ভাসমান বেডে শাক, ঢেড়শ, লাউ, কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শশা, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করেছেন।

কৃষি গবেষণার সহযোগিতায় ও পরামর্শে এ বছর প্রথম তারা তরমুজ চাষ করলেন। তরমুজ চাষে কোন সেচ, কীটনাশক ও সার প্রয়োজন পড়েনি।

আরেক কৃষক বলেছে, অর্গানিক পদ্ধতিতে মানব দেহের জন্য নিরাপদ তরমুজ আমরা সফলভাবে উৎপাদন করেছি। বজারে এ তরমুজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
“ তাই প্রতিটি তরমুজ একশ থেকে দুইশ টাকা দরে বিক্রি করেছি। কম খরচে তরমুজ উৎপাদন করে অধিক লাভবান হয়েছি।”

গোপালগঞ্জ বড় বাজারের এক ফল বিক্রেতা জানায়, এ বছর বাজারে অসময়ের তরমুজ প্রচুর আমদানি হয়েছে। এ তরমুজ খুবই রসাল ও মিষ্টি। তাই ক্রেতাদের কাছে চাহিদা রয়েছে বেশ ভাল।

“প্রতিটি তরমুজ আমরা ১৫০ টাকা থেকে ৩ শ’ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এ তরমুজে চাষিরা যেমন পয়সা পেয়েছেন; তেমনি আমরাও লাভবান হয়েছি।”