খুলনায় বিলের মাঝে ভাসমান সবজি চাষ

খুলনায় বিলের মাঝে ভাসমান সবজি চাষ

খুলনা সংবাদদাতা: খুলনার তেরখাদা উপজেলার সর্ববৃহৎ পতিত জলাভূমি ভূতিয়ার বিল উপজেলাবাসীর জন্য এক নিরব কান্না। পানিবদ্ধতায় দীর্ঘদিন পতিত থাকায় হতাশ ভূমি মালিকরা। বিশাল জমির মালিকানা থাকলেও তারা কোনো কাজে লাগাতে পারেন না।

এদিকে, বিগত ৩ বছর বিশাল ভূতিয়ার বিলের মাঝখানে দুই বিঘা জমিতে পানির উপরে কৃষকরা চাষাবাদ করছেন মৌসুমি সবজি। ভাসমান এ সবজি চাষে সাফল্যের হাসি হাসছেন কৃষকরা। ভূতিয়ার বিলের বুকে দুই বিঘা জমি যেন এক টুকরা উর্বর উদ্যানে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন পতিত বিশাল এ ভূমিতে এখন সবজির সমারোহ। সম্পূর্ণ রাসায়নিক সার ও কীটনাশকমুক্ত পরিবেশে ভাসমান বেডে লতাবিহীন সবজি উৎপাদন হচ্ছে। স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভ হওয়ায় দিনের পর দিন এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ভাসমান বেডে চাষাবাদ হচ্ছে- লালশাক, ওলকপি, উচ্চে, শসা, ধুনিয়া, ঢ্যাঁড়স, রসুন, পেঁয়াজ, আলুসহ অন্যান্য শাকসবজি। গেল দুই বছরের চেয়ে এবার বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

স্থানীয় ভাসমান সবজি চাষি জানায়, বসতবাড়ি ছাড়া আমার কোনো জায়গা-জমি নেই। তাই ভূতিয়ার বিলের মাঝখানে ভাসমান সবজি চাষ করে আমি এখন ভালো আছি। বাজারে এখনকার সবজি নিয়ে গেলে মানুষ আগেই এইটা কিনে নেয়। সবাই জানেন এখানের সবজি বিষমুক্ত। পাইকাররাও আমাদের কাছ থেকে শাকসবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেখাদেখি অন্যরাও এখন ভূতিয়ার বিলে ভাসমান সবজি চাষাবাদ শুরু করেছে। সবাই লাভবান হচ্ছি। একটা সময় তো এ বিলে কিচ্ছু হতো না।

একই বিলের কৃষকরা জানায়, বর্তমান বাজারমূল্য ভালো থাকায় ভাসমান সবজি চাষে বেশ লাভবান হচ্ছেন তারা। তবে ভূতিয়ার বিলে তাদের জমি নেই। এখানে সবজি চাষাবাদের ফলে ভূমি মালিকরা খুশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, সবজি চাষাবাদে উৎসাহিত করতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজসহ প্রশিক্ষণ দিয়েছি। হাতে-কলমে কৃষকদের বেডে গিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছি। প্রতিটি বেডে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। আর প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে কৃষকদের। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। তাদের দেখে অন্যরাও এগিয়ে আসছেন ভাসমান সবজি চাষে।