কিছু ক্ষতি হলেও রামপাল সরবে না: অর্থমন্ত্রী

ঢাকা: সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নেতিবাচক কিছু প্রভাব পরিবেশের উপর পড়বে স্বীকার করে নিয়েও প্রকল্পটি না সরানোর পক্ষে সরকারের অবস্থান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেছেন, “দেয়ার উড বি সাম ইমপ্যাক্ট, অবভিয়াসলি (অবশ্যই কিছু প্রভাব পড়বে)। এত নৌকা আসবে, ক্যারিং সো মাচ কোল; এই নৌকা আসার ফলেই তো ফ্লোরা-ফনা ভেরি সাবস্টেনশিয়ালি অ্যাফেক্টেড হবে।”

ভারতের সঙ্গে যৌথ অর্থায়নে বাগেরহাটের রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে, যা বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের জন্য হুমকি হবে দাবি করে তার বিরোধিতা করে আসছে পরিবেশবাদীরাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

তবে ক্ষতির সম্ভাবনা নাকচ করে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ক্ষতি যতটুকু সম্ভব কমিয়েই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “রামপাল নিয়ে আমাদের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য হল, তারা একটা ভালো পরিবেশগত সমীক্ষা করেছে। সেখানে খুব বেশি ইমপ্যাক্ট হবে না বলে দেখা গেছে।’”

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সরিয়ে অন্য কোথাও করা যায় কি না- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটার মনে হয়, এখন পসিবিলিটি নাই।”

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ব্যাংকের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক পলা ক্যাবালেরো নেতত্বাধীন একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসার জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের ঝুঁকি খতিয়ে দেখতে ইউনেস্কোর একটি প্রতিনিধি দলেরও মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে।

অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় প্রথমে রামপাল নিয়ে এখনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

“আমি রামপাল যাচ্ছি। সেখান থেকে ফিরে কথা বলা যাবে,” বলার পর কিছু কথা বলেন তিনি।

World Heritage Sundarban2এই প্রকল্প সরানোর ক্ষেত্রে জটিলতার বিষয়টি তুলে ধরে মুহিত বলেন, “কোল বেইজড প্ল্যান্ট তো ল্যান্ড বেইজড বাংলাদেশে করার সুযোগ নেই। আমরা এই লেসনটা নিয়েছি। এ কারণে ভবিষ্যতে কয়লাভিত্তিক প্ল্যান্ট মহেশখালী, পায়রাসহ অন্যান্য উপকূলীয় এলাকায় হবে।”

খুলনা-ভোলা-পটুয়াখালীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দ্বীপগুলো খতিয়ে দেখে ভবিষ্যতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সুন্দরবন সম্পর্কে জানতে চাইলে এক পর্যায়ে মন্ত্রী বলেন, “সুন্দরী গাছ আমরা খুব কেটে ফেলতেছি। তার ফলে সুন্দরবন ব্যাপক এলাকা বন থেকে আলাদা হয়ে যাবে। এটা আমাদের জন্য ভালো না।

“আমাদের বন এলাকা খুব কম। এটা নয় ভাগ, অন্তত ১৫ ভাগ থাকা উচিত। এই জন্য সুন্দরবন নিয়ে আমাদের ডমেস্টিকালি কিছু করতে হবে।”

গাছ কাটা বন্ধের পাশাপাশি জনগণ যেন বন রক্ষায় এগিয়ে আসে, সেই সচেতনতা গড়ে তোলার উপর জোর দেন তিনি।

“জ্বালানিতে কাঠের ব্যবহার কমাতে আমরা এখন সারা দেশে এলপিজি সরবরাহ করছি। এটা সুন্দরবন ধ্বংসরোধে একটা বড় সহযোগিতা হতে পারে।”