করোনার টিকা নিয়ে ২৩ হাজার কোটি টাকার ‘গড়মিল’ দেখছে টিআইবি

করোনার টিকা নিয়ে ২৩ হাজার কোটি টাকার ‘গড়মিল’ দেখছে টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারের টিকা কার্যক্রমে অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতার ঘাটতি পেয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এক্ষেত্রে ২৩ হাজার কোটি টাকার হিসাব পায়নি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এক গবেষণা প্রতিবেদন উত্থাপনের মাধ্যমে এই দাবি করে টিআইবি।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালের জুলাই-এ গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে টিকা প্রতি ৩ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। পরে ২০২২ সালের ১০ মার্চ গণমাধ্যমে টিকা কার্যক্রমে মোট ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকা বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। সরকারি তথ্য মতে ৩১ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত মোট ২৪.৩৬ কোটি ডোজ টিকাদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের টিকা পরিকল্পনায় টিকা কার্যক্রম সম্পর্কিত ব্যয় টিকা প্রতি দুই ডলার (১৭০ টাকা) হিসেবে ধরা হয়।

এছাড়া কোভ্যাক্স রেডিনেস অ্যান্ড ডেলিভারি ওয়ার্কিং গ্রুপের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের টিকা কার্যক্রম সম্পর্কিত ব্যয়ের মডেল করা হয় যেখানে একটি দেশের টিকা কার্যক্রমে বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল ব্যবহার এবং আউটরিচ কেন্দ্রের অনুপাত বিবেচনায় টিকা ক্রয়ের পর থেকে মানুষকে টিকা দেওয়া পর্যন্ত সকল ব্যয় হিসাব করে টিকা প্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ০.৮৪ ডলার (৭১.৪ টাকা) থেকে ০২.৬৪ ডলার (২২৪.৪ টাকা)। সেই হিসাবে টিকা কার্যক্রম সংক্রান্ত ব্যয়ের প্রাক্কলিত পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৩৯.৬ কোটি টাকা থেকে ৫ হাজার ৪৬৭.৩ কোটি টাকার মধ্যে। জাতীয় টিকা পরিকল্পনায় প্রাকল্লিত ব্যয় ৮ হাজার ১৪২ কোটি টাকা এবং টিকার প্রাক্কলিত মূল্য ১১ হাজার ২৫৪.৪ কোটি টাকা।
টিকার প্রক্কিলিত ক্রয়মূল্য ও টিকা ব্যবস্থাপনার প্রাক্কলিত মোট ব্যয় দাঁড়ায় ১২ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা থেকে ১৬ হাজার ৭২১ কোটি টাকা, যা স্বস্থ্যমন্ত্রী প্রদত্ত হিসাবের অর্ধেকেরও কম। শুধু একটি দেশের ক্ষেত্রে টিকার ক্রয়মূল্য প্রকাশ না করার শর্ত থাকলেও অন্যান্য উৎস থেকে কেনা টিকার ব্যয় এবং টিকা কার্যক্রমে কোন কোন খাতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি।

গবেষণা প্রতিবেদনে টিকা কার্যক্রমের বেশ কিছু ঘাটতির কথা উল্লেখ করা হয়।

টিকা কেন্দ্রে অতিরিক্ত ভিড় এড়িয়ে যথাসময়ে বা দ্রুত টিকা পেতে ১০.১ শতাংশ সেবাগ্রহীতাকে গড়ে ৬৯ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। এছাড়া প্রবাসীরা টিকার নিবন্ধনের জন্য বিএমইটি নম্বর পেতে ১৫০-২০০ টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছে। দু’একটি কেন্দ্রে নিয়ম- বহির্ভূতভাবে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে পছন্দ অনুযায়ী টিকা প্রদান করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে টিকা না নিয়েও টাকার বিনিময়ে প্রবাসীরা টিকা সনদ সংগ্রহ করতে হয়েছে। টাকার বিনিময়ে টিকা করা একটি গ্রুপ ফেসবুক পেজে প্রবাসীদের চাহিদা অনুযায়ী টাকার বিনিময়ে টিকা সার্টিফিকেট দেওয়ার বিষয়ে প্রচার করতে দেখা গেছে।