এক জমিতে ৪ ফসল ফলানোর বিপ্লব

ময়মনসিংহ: একই জমিতে ৪ ফসল উৎপাদনে সফলতা পাওয়ায় ময়মনসিংহে কৃষকদের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহা-পরিচালক ড. মুহম্মদ রফিকুল ইসলাম মন্ডল এ পদ্ধতির উদ্ভাবক। ময়মনসিংহ জেলায় সরেজমিন গবেষণা বিভাগ ১০ একর জমিতে ৪ ফসল উৎপাদন করে সাফল্য পেয়েছে। তারা জানান, ৪ ফসল উৎপাদনে উচ্চফলশীল জাত ও স্বল্প সময়ে উৎপাদন হয় এমন জাত বাছাই করেই ফসলের বিন্যাস করতে হবে।

সারা দেশে এ পদ্ধতি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরেজমিন গবেষণা বিভাগ ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। সারা দেশে আরো বেশি কৃষকদের সম্পৃক্ত করতে আয়োজন করা হচ্ছে উদ্ধুদ্ধকরণ সমাবেশ ও মাঠ দিবস। একান্ত আলাপে গবেষক ড. রফিকুল ইসলাম মন্ডল মনে করেন শাক-সবজির ক্ষেত্রে ৫ ফসলও উৎপাদন সম্ভব।

তিনি বলেন, দেশে জনসংখ্যা দিনদিনই বেড়ে চলেছে। ফলে উৎপাদিত জমি দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে জমির পরিমাণ বাড়ছেনা। খাদ্য চাহিদাও বেড়ে চলেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে গড়ে একই জমিতে ২ ফসল উৎপাদন হচ্ছে। যেভাবে জনসংখ্যা বাড়ছে ও আবাদি জমির পরিমান কমছে, তাতে ২ ফসল দিয়ে আগামী দিনে দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যইে একই জমিতে ৪ ফসলের পদ্ধতি এখন সময়েরই দাবী।

৪ ফসলের এই পদ্ধতি গবেষণাগারে সফলতার পর মাঠ পর্যায়েও সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছেন ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম মন্ডল। ফসল বিন্যাস হিসেবে উচ্চফলনশীল জাত ও স্বল্প সময়ে উৎপাদনশীল জাত নিয়ে একই জমিতে ৩ ধান, ১ সরিষা/ ৩ ধান, ১ আলু/ ২ ধান, ১ তেল, ১ ডাল করলে দেশে দিগুণ খাদ্য উৎপাদন সম্ভব বলে এ গবেষক মনে করেন।

ময়মনসিংহ সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহম্মদ সহিদুজ্জামান জানান, ময়মনসিংহ জেলায় গড়ে ৬০ শতাংশ জমিতে ২টি ফসল হয়। ২ ফসল উৎপাদনের পর এ জমিগুলো পতিত থাকে। কাজেই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত পদ্ধতি একই জমিতে স্বল্প মেয়াদি সরিষা, ধান, ডাল, সবজিসহ ৪টি ফসল করলে কৃষির উৎপাদন দিগুণ বৃদ্ধি পাবে। ময়মনসিংহ জেলায় ত্রিশালসহ বিভিন্ন স্থানে ১০ একর জমিতে এই পদ্ধতির প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।