উত্তর-দক্ষিণ কেউ নিচ্ছে না ময়লার গাড়ির দুর্ঘটনার দায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় এক নারী আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ওই ময়লার গাড়ির চালককে আটক করা হয়েছে। তবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ- দুই সিটি করপোরেশনই জানিয়েছে গাড়িটি তাদের নয়।
মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ জানায়, ওই ময়লার গাড়ির সামনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) স্টিকার লাগানো।

তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, যে গাড়িটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে, এটি ‘যশোর-ট-১২৩৬’ ক্রমিকের গাড়ি। এমন গাড়ি ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কার্যক্রম কিংবা করপোরেশনের কোনো কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয় না। এমনকি করপোরেশনের গাড়ির যে তথ্যভান্ডার রয়েছে তাতেও এ ধরনের কোনো গাড়ির তথ্য-উপাত্ত নেই। এছাড়া দুর্ঘটনাস্থল হিসেবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট স্থানও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় নয়।
সুতরাং এটা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান যে, দুর্ঘটনা ঘটানো ওই ময়লার গাড়িটি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন নয়।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মোহাম্মদপুর এলাকাটি ডিএনসিসির আওতাধীন। এজন্য অনেকেই বলছেন গাড়িটি ডিএনসিসির। অথচ ডিএনসিসির ময়লাবাহী এমন গাড়ি নেই। গাড়িটিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্টিকার লাগানো রয়েছে।
জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, ময়লার গাড়িটি দুই সিটি করপোরেশনের কারও নয়। ময়লার গাড়িটি ছিল ব্যক্তিমালিকানাধীন। তবে গাড়িটিতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্টিকার ছিল। গাড়ির চালককে আটক করা হয়েছে। আটক চালকের নাম রতন (৩০)।

ওসি আব্দুল লতিফ আরও বলেন, আহত ওই নারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। জব্দ করা গাড়ি ও চালক থানায় আটক আছে। যদি ওই নারী আইনগত ব্যবস্থা নেন, তা হলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।

এর আগে গত ২৪ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিস্তান হল মার্কেটের সামনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লার গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান। পরদিনই বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর পান্থপথ এলাকায় উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নিহত হন কবির খান নামের আরেক ব্যক্তি; তিনি দৈনিক প্রথম আলোর সাবেক কর্মী। দুই দুর্ঘটনায়ই চালকদের গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার পর দুই সিটি করপোরেশনই গঠন করেছে তদন্ত কমিটি।