প্রতিটি আইফোন আনলকে এফবিআইএ’র ব্যয় সাড়ে ১০ কোটি টাকা

আইফোন আনলক

আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান বার্নার্ডিনো কাউন্টির হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তির আইফোন আনলক করতে মার্কিন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা এফবিআই ১৩ লাখ ডলারের বেশি ব্যয় করেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয়ের পরিমাণ দশ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ কাজে সংস্থাটির প্রধানের সাত বছরের বেতন-ভাতার চেয়েও বেশি অর্থ ব্যয়ের কথা স্বীকার করেছেন এফবিআই পরিচালক জেমস কমে। তিনি বৃহস্পতিবার লন্ডনে অ্যাসপেন সিকিউরিটি ফোরামের বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন।

গত ৩ ডিসেম্বরে ২৮ বছর বয়সি সাঈদ রেজওয়ান ফারুক এবং তার স্ত্রী তাশফিন মালিক আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার সান বার্নার্ডিনো কাউন্টির একটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অন্তত ১৪ ব্যক্তিকে হত্যা করে। এছাড়া, হামলায় আহত হয় আরো ২২ ব্যক্তি। পরে পুলিশের গুলিতে সন্দেহভাজন ওই দম্পতি প্রাণ হারায়। ২০১২ সালের পর আমেরিকায় গুলিবর্ষণের একক ঘটনায় এতো বেশি মানুষ আর প্রাণ হারায়নি।

বার্নার্ডিনো হত্যাকাণ্ডের প্রাসঙ্গিক তথ্য জানতে এফবিআই ফারুকের ব্যবহৃত আইফোন ৫সি আনলক করার প্রয়োজনবোধ করে। কিন্তু ডেটার সুরক্ষার জন্য ২৫৬ বিটের এইএস বা অ্যাডভান্স এনক্রিপশান সিস্টেম ব্যবহার করায় আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ওই আইফোন আনলক করতে পারে নি অ্যাপেল। আদালতকে এ কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক।

আইফোনটি হ্যাক করার জন্য এফবিআই তৃতীয় পক্ষের সহায়তা নিয়েছিল এবং শেষে সফলও হয়েছে। এ জন্য কত ব্যয় হয়েছে জানতে চাওয়া হলে জেমস কমে বলেন, আগামী সাত বছর চার মাস চাকরি করে তিনি যে আয় করবেন তার চেয়ে বেশি অর্থ এ জন্য দেয়া হয়েছে।

এফবিআই প্রধান ২০১৫ সালে আয় করেছেন এক লাখ ৮৩ হাজার ডলার। বেতন-ভাতা বাড়ানো হবে না ধরে নেয়া হলে আগামী সাত বছর চার মাসে তিনি আয় করবেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার। অর্থাৎ আইফোনটি আনলক করতে ১৩ লাখ ৪০ হাজার ডলারের বেশি দেয়া হয়েছে । এর আগে ফোন হ্যাক করার জন্য মার্কিন তথ্য নিরাপত্তা কোম্পানি জেরোডিয়ামকে ১০ লাখ ডলার দিয়েছিল এফবিআই । এবার তা অতিক্রম করে নতুন রেকর্ড হলো।

এ বিপুল অর্থ ব্যয় করে ফারুকের আইফোন থেকে কার্যকর তথ্য পাওয়া গেছে কিনা তা নিয়ে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম পরস্পর বিরোধী খবর দিয়েছে। গত বুধবার মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সিবিএস নিউজ বলেছে, আইফোন থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পায় নি এফবিআই। অন্যদিকে সিএনএন দাবি করেছে, ফোন থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করেছে এফবিআই।

এদিকে, আইফোন খোলার কাজে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সেলব্রাইট মোবাইল নামের একটি কোম্পানিকে নিয়োগ করা হয়েছিল বলে জল্পনা  শোনা যাচ্ছে।