নারিকেল দ্বীপ ভ্রমণে বাঁধা পর্যটনক খাতকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে – স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি
ঢাকা: বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার গত আওয়ামী সরকার কর্তৃক জারীকৃত পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সেই প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশের স্বার্থ ও ঝুঁকি বিচার-বিশ্লেষণ না করে নারিকেল দ্বীপ ভ্রমণ ও অবস্থানের উপর বিধি-নিষেধ আরোপের মাধ্যমে গত জালেম সরকারকে অনুসরণ করছে বলে মন্তব্য করছে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা বলেন, নারিকেল দ্বীপ ভ্রমণে বিধি নিষেধ আরোপের নেতিবাচক প্রভাব বলে শেষ করা যাবে না। ওই দ্বীপের স্থানীয় জনগণ ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার হলেও দ্বীপের ভ্রমণশিল্পের সাথে জরিত মানুষের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। তাদের জীবন-জীবিকার ঝুঁকির মুখে পড়বে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির হলরুমে সাংবাদিক সম্মেলনে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি সংগঠনের আহবায়ক মুহম্মদ জিয়াউল হক ও সংগঠনটির সদস্য সচিব মিনহাজ তৌকি এসব কথা বলে।
তারা বলেন, বিশেষভাবে স্থানীয়দের ৯৫ ভাগ মানুষের জীবন-জীবীকার উপায় শীতকালের ৪ মাসের ভ্রমণশিল্প। সরকার পরিবশে রক্ষার নামে সেই চার মাসেই ভ্রমণের উপর বিধি নিষেধ আরোপ করেছে যেটা দ্বীপবাসীর প্রতি সরকারের অমানবিক সিদ্ধান্ত ও মৌলিক অধিকার হরণ। সব দিক বিবেচনায় আমরা নারিকেল দ্বীপের উপর আরোপিত সব ধরণের বিধি নিষেধ তুলে দেয়ার দাবী করছি।
সম্প্রতি সরকার বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন দ্বীপ নারিকেল জিঞ্জিরায় (সেন্ট মার্টিন) পর্যটক যাওয়া সীমাবদ্ধ করেছে। বিশেষ করে শীতকালে যে ৪ মাস দ্বীপটিতে পর্যটক যাওয়া আসা বেশি হয়, তখনই পর্যটকদের উপর নানান বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। পরিবেশ রক্ষার নামে এটি বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে ক্ষতিগ্রস্থ করে ভারতীয় পর্যটনকে লাভবান করবে।
বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে যখন বাংলাদেশীদের যাতায়াতে বাধা দেয়া হবে, তখন স্বাভাবিকভাবে পর্যটকরা ভারতমুখী হবে। ভারতের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে তখন বাংলাদেশীরা যাতায়াত শুরু করবে। এটা দেশের ভ্রমণশিল্প ও অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এছাড়া, বাংলাদেশের ভ্রমণ শিল্পকে বাধাগ্রস্থ করতে টোয়াবের দেয়া তথ্য মতে, ট্যুর অপারেটর নিবন্ধনসংক্রান্ত নতুন
বিধিমালায় কিছু নিয়ম ও শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ট্যুর অপারেটর, ট্যুর গাইড নিবন্ধন ও পরিচালনার
লাইসেন্স আবেদনে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। এ ছাড়া ১০ লাখ টাকা ব্যাংক স্থিতি ও তিন লাখ টাকা জামানতের বাধ্যবাধকতা আছে। এছাড়া ট্যুর অপারেটর সেবায় ১৫ শতাংশ মূসক (ভ্যাট) ধার্য করার ভ্রমণ ব্যয় বাড়ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি গোটা পর্যটনশিল্প ভারতমুখী হয়ে পড়বে। অতএব, পরিবেশবাদের ছদ্মাবরণে নারিকেল দ্বীপ ভ্রমণ ও অবস্থানের উপর বিধি নিষেধ আরোপ বাংলাদেশের পর্যটনকে ভারতমুখী করার কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা জরুরী।
তাছাড়া ২০২২ সালে ৪ঠা জানুয়ারী বিগত জালেম সরকার আমেরিকা ও ভারতের স্বার্থে বাংলাদেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সেন্টমার্টিন দ্বীপ সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিমি এলাকাকে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। পরিবেশের ছদ্মাবরণে যেটা ছিল মার্কিন-ভারত জোটের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজির অংশ। ইন্দো- প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ যাতে আমেরিকা-ভারত বনাম চীন দ্বন্দ্বের বলির পাঠা না হয় সেজন্য ইতিপূর্বে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ একটি বিবৃতিও দিয়েছিল।