শেয়ারবাজারের জন্য শরিয়া বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত
নিউজ ডেস্ক: শেয়ারবাজারের জন্য শরিয়া বোর্ড গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শরিয়া অর্থনীতি বা অর্থ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দেশি-বিদেশি ব্যক্তিদের নিয়ে এ বোর্ড গঠন করা হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
শরিয়া বোর্ড গঠনের ফলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আরও উৎসাহী হবেন। এতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে মনে করছে বিএসইসিসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা।
ইতোমধ্যে শেয়ারবাজারের শরিয়া বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। এ কমিটির সদস্যরা হলেন—বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম, নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম ও যুগ্ম পরিচালক শেখ মো. লুৎফুল কবির। এ কমিটির আহ্বায়ক হিসবে বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম ও সদস্য সচিব হিসবে শেখ মো. লুৎফুল কবির দায়িত্ব পালন করবেন।
কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে শেয়ারবাজারের জন্য শরিয়া বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনাসম্বলিত একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
শরিয়া বোর্ড কীভাবে গঠন করা হবে এবং এ বোর্ডর কার্যক্রম কীভাবে চলবে সে বিষয়ে গাইডলাইন তৈরি করবে বিএসইসি গঠিত কমিটি। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে যেন তা গ্রহণযোগ্যতা পায়, সে বিষয়টি মাথায় রেখেই গাইডলাইন প্রণয়ন করা হবে।
এদিকে, দেশের শেয়ারবাজারে ইসলামিক বন্ড (সুকুক) শিগগিরই চালু করবে করবে বিএসইসি। ইতোমধ্যে গত ২৩ জুন প্রথমবারের মতো বেক্সিকো লিমিটডকে শর্ত সাপেক্ষে গ্রিন সুকুক বন্ড ছেড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের অনুমোদন দিয়েছে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বিএসইসি মনে করে, বাংলাদেশে সুকুক বন্ডের অনেক চাহিদা আছে। শেয়ারবাজারে এই বন্ড চালুর অনেক সুযোগও আছে। অনেক বিনিয়োগকারী নির্দিষ্ট সুদের পরিবর্তে ইসলামিক প্রক্রিয়ায় আয় করতে চান। সুকুক বন্ড থেকে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। সুকুককে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেছেন, ‘শেয়ারবাজারের জন্য একটি শরিয়া বোর্ড গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। বিএসইসি ইতোমধ্যে সুকুক বন্ড অনুমোদন দেওয়া শুরু করেছে। সুকুক বন্ডসহ অন্যান্য কার্যক্রম যেন শরিয়াভিত্তিক করা হয়, সেজন্যই শেয়ারবাজারের একটি শরিয়া বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ শরিয়াহ বোর্ডে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের রাখা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের মনে সাধারণত ইসলামি শরিয়া বিষয়ে যেসব প্রশ্ন আসে, সেগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে এ শরিয়া বোর্ড গঠন করা হবে। এ সংক্রান্ত কমিটি গাইডলাইন প্রস্তুত করবে।’
এ বিষয়ে শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেছেন, ‘বিএসইসি একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। তবে শরিয়া বোর্ড এমনভাবে গঠন করতে হবে, যাতে কোনো প্রশ্ন না ওঠে। ইসলামি শরিয়া বিষয়ে অভিজ্ঞ দেশি ও বিদেশি ব্যক্তিদের এ বোর্ডে রাখতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেয়ারবাজার সংক্রান্ত শরিয়া বোর্ড রয়েছে। প্রয়োজনে বিএসইসি সেসব দেশের শরিয়া বোর্ডের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে গাইডলাইন তৈরি করবে।’