‘ইসলাম বিনাশী’ শিক্ষানীতি পরিবর্তন না হলে দুর্বার গণআন্দোলন
নিউজ নাইন২৪, ঢাকা: জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে চলমান এই আন্দোলন হঠাৎ গড়ে উঠা কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া নয়। দীর্ঘদিনের ইসলাম বিরোধিতার ফলে সৃষ্ট উত্তাপের বিষবাষ্পের সামান্য উদ্গীরণ। ইসলাম বিনাশী প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন পরিবর্তন না হলে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব ফয়জুল্লাহ। বুধবার দুপুরে ইসলামী ঐক্যজোটের লালবাগস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ হুঁসিয়ারি উচ্চারণ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মালানা আবদুল লতিফ নেজামী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষানীতির অধীনে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির জন্য প্রণীত পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলামী ভাবধারার মুসলিম লেখকদের প্রবন্ধ-নিবন্ধ, নাটক ও গল্প-কবিতা শুধু বাদ দেয়াই হয়নি বরং এসব শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে নাস্তিক্যবাদী ও ব্রাহ্মণ্যবাদী ভাবাদর্শের রচনা, গল্প, নাটক ও কবিতা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। যা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ঈমান-আক্বিদা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য এই শিক্ষানীতি একপেশে, একমুখি, মূল্যবোধহীন, নৈততিকতাহীন ধর্ম এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য বিরোধী।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ও মাদরাসার জন্য প্রণীত পাঠ্যপুস্তকে ইসলামী ভাবধারার মুসলিম লেখকদের প্রবন্ধ-নিবন্ধ, নাটক ও গল্প-কবিতা পুনঃপ্রতিস্থাপন না হওয়া পর্যন্ত সভা-সমাবেশ, মিছিল ও গণসংযোগ প্রভৃতি কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
আব্দুল লতিফ নেজামী আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে অধ্যাপক কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি জাতীয় শিক্ষা উন্নয়ননীতি প্রণয়ন কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি ১৯৭৪ সালে পরিত্যক্ত ড. কুদরতে খোদা কর্তৃক প্রণীত ইসলাম বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতিকেই বর্তমান ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ হিসেবে নতুনভাবে উপস্থাপন করেন। এই কমিটি কর্তৃক প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে কমিটির সদস্যদের ব্রাহ্মণ্যবাদী, নাস্তিক্যবাদী, সমাজতান্ত্রিক ও ধর্ম বিদ্বেষী মনোভাবের প্রতিফলন ঘটে। এই শিক্ষানীতির অধীনে প্রণীত পাঠ্যপুস্তকে সরকারে ঘাপটি মেরে থাকা বিভ্রান্ত বিশ্বাসের অনুবর্তী একশ্রেণির লোকদের রাজনৈতিক অঙ্গিকার ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অভিপ্রায়ের বিকাশ ঘটে।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর সকল দেশেরই নিজস্ব আদর্শ রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার সিলেবাস এর ব্যতিক্রম। একমুখি শিক্ষার নামে ধর্মীয় শিক্ষা সঙ্কোচনের একপেশে উদ্যোগ অনাকাঙ্খিত এবং চিরায়ত মূল্যবোধের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এসব পদক্ষেপ এদেশের জনগণের লালিত ও ধারণ চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সুদীর্ঘকাল ধরে প্রচলিত ধর্মীয় শিক্ষার বাস্তব সত্যকে অস্বীকার করে শিক্ষার ক্ষেত্রে অন্যের সঙ্গে অভিন্নতাবোধ নির্মাণের প্রয়াস হিসেবে ধর্মীয় শিক্ষাকে বৈশিষ্টহীনতায় রূপান্তরের এই ষড়যন্ত্র বরদাশত করার কোনোই সুযোগ নেই।’