বিডিআর বিদ্রোহে খালেদার বিচার চাইলেন হাছান

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: বিডিআর বিদ্রোহে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জড়িত অভিযোগ করে তার বিচার দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “যেদিন বিডিআর হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়, সেদিন খালেদা জিয়া অনেক ভোরেই তার বাড়ি থেকে গোপনে বেরিয়ে গিয়েছিলেন এবং তিনি কয়েকদিন তার বাসায় ছিলেন না।
“যিনি কোনোদিন দুপুর ২টার আগে ঘুম থেকে উঠেন না, রাত ৮টার আগে স্থায়ী কমিটির বৈঠক করতে পারেন না, কেন সেদিন তিনি এত ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাসা থেকে চলে গিয়েছিলেন? এ প্রশ্নটি পুরো জাতির।”
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) সদর দপ্তর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই বিদ্রোহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোড়ন তোলে। বিদ্রোহের পর সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে যায়, পরিবর্তন আসে পোশাকেও। বাহিনীর নাম এখন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি।
আওয়ামী লীগ নেতারা বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে বিএনপিনেত্রীর ইন্ধনের অভিযোগ করে আসছেন; বিএনপি নেতারাও পাল্টায় একই ধরনের অভিযোগ করে আসছেন।
অনুষ্ঠানে বিডিআর বিদ্রোহে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিচার দাবি করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান বলেন, “আমি সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি, খালেদা জিয়াসহ আরও কারা কারা বিডিআর হত্যাকাণ্ডে জড়িত তা তদন্ত করে বের করে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হোক।”
‘চলমান রাজনীতি দেশ ও জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রয়োজন’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা পরিষদ।
হাছান মাহমুদ দাবি করেন, বিডিআর বিদ্রোহে যেসব চৌকশ অফিসারদের হত্যা করা হয় তার প্রায় ৭০ ভাগ আওয়ামী পরিবারের সদস্য, তাদের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত।
“যেহেতু তারা আওয়ামী লীগ পরিবারের ছিল তাই বিএনপি আমলে তাদেরকে সেনাবাহিনী থেকে বের করে বিডিআর দেওয়া হয়। এটা কোনো বিডিআরের জওয়ানের বিদ্রোহ ছিল না, এটা ছিল সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ।”
এসময় তিনি মানববন্ধন ও বিভিন্ন সভা করে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের আরও তদন্তের দাবি জানানোয় বিএনপিকে ‘ধন্যবাদ’ও জানান।
‘গুরুজন’ হিসেবে খালেদা জিয়াকে ‘শ্রদ্ধা’ জানানোর কথা উল্লেখ করে একুশের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে তার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েও অনুষ্ঠানে প্রশ্ন তোলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
“বেগম খালেদা জিয়া আমার গুরুজন, আমি তাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আমি জানতে চাই, তিনি ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে গিয়েছিলেন শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে, নাকি শহীদদের অবমাননা করার জন্য?”
পরিষদের সভাপতি ব্যারিস্টার জাকির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম ও আব্দুল হাই কানু।