‘অনিবার্য’ কারণে বিএনপির কর্মসূচি স্থগিত
নিউজ নাইন২৪, ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরদিন তাদের জোট শরিক দল বিএনপি কয়েকটি কর্মসূচি স্থগিত করেছে।
নিজামীর মৃত্যুদণ্ড নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকা বিএনপি কর্মসূচি স্থগিতের জন্য ‘অনিবার্য কারণ’ উল্লেখ করে তার আর কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল জামায়াতের আমির নিজামীকে বুধবার প্রথম প্রহরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদে জামায়াত বৃহস্পতিবার সারাদেশে হরতাল ডাকার পাশাপাশি বুধবার গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি দেয়।বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপির নয়া পল্টন কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি সংবাদ সম্মেলনের কথা সাংবাদিকদের মঙ্গলবার রাতে জানানো হয়েছিল।
তবে কর্মসূচি জানানোর ৪৫ মিনিট পর রাতে তা ‘অনিবার্য’ কারণ দেখিয়ে স্থগিতের কথা জানানো হয়।
দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা করতে মহাসচিবের এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছিল বলে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
স্থগিতের কারণ চাইতে চাইলে বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম সাংবাদিকদের বলেন, “অনিবার্য কারণে স্থগিত হয়েছে।”
বুধবার মির্জা ফখরুলের আরেকটি কর্মসূচি ছিল সকাল ১১টায় পুরান পল্টনে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে। জোট শরিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির এক অনুষ্ঠানে তার প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল। কিন্তু ওই কর্মসূচিতেও তিনি যাননি।
বিকালে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাদ আসর মহানগর ঢাকা দক্ষিণের উদ্যোগে প্রয়াত নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্মরণে দোয়া মাহফিল হওয়ার কথা ছিলো। সেই অনুষ্ঠানটিও স্থগিত করা হয়।
কার্যালয়ে সামনে অনুষ্ঠানে আসা দলের সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, “দোয়া মাহফিলে যোগ দিতে এসেছিলাম। কিন্তু তা স্থগিত করা হয়েছে।”
বিকালে বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, দপ্তরসহ মহাসচিবের অফিস বন্ধ। অফিসের কয়েকজন কর্মচারী দরজা বন্ধ করে টেলিভিশন দেখছেন।
অফিসের কর্মী রফিক বলেন, “আজকে সকাল থেকে কোনো নেতা অফিসে আসেননি।”
প্রতিদিন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নয়া পল্টনের কার্যালয়ে এলেও বুধবার তিনি যাননি।
আগের দিন নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তোড়জোড়ের মধ্যে রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে এলে তার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। তিনি এনিয়ে নীরবতা অবলম্বন করেন।
জোট শরিক দলের প্রধান নিজামীর ফাঁসি কার্য্করের পর বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলা হলেও কেউ এই বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।
এর আগে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এম কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির কার্য্করের পরও বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
তবে দলীয় নেতা যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে এসে আসাদুজ্জামান রিপন বলেছিলেন, তার দলের নেতা ‘ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত’ হয়েছেন।