পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান
নিউজ ডেস্ক: পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থানের মধ্যে এটি একটি। রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপে এ মৃত্যু উপত্যকার অবস্থান। রাশিয়ার পূর্ব প্রান্তে সাইবেরিয়া অঞ্চলে অবস্থিত আগ্নেয় পর্বতময়, তুষারাচ্ছন্ন উপদ্বীপ কামচাটকায় অনেকগুলো সক্রিয় আগ্নেয়গিরি আছে। এই উপদ্বীপের পূর্বাংশে রয়েছে কেহিন্নাইক আগ্নেয়গিরি। এই আগ্নেয়গিরির পাদদেশেই তৈরি হয়েছে এ মৃত্যু উপত্যকা।
১৯৭৫ সালের জুলাই মাসে এ মৃত্যু উপত্যকা আবিষ্কারের পর থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত রিজার্ভ কর্মীরা নিয়মিতভাবে এলাকাটি পরীক্ষা করে দেখে। তারা প্রায় ২০০টি মৃত প্রাণী এবং পাখি সংগ্রহ করে। মৃত এসব প্রাণীদের মধ্যে ছিল ১২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৫ টি প্রজাতির পাখি এবং নানাপ্রকার কীটপতঙ্গ। এমনকি রিজার্ভ কর্মীদের সঙ্গে যেসব কুকুর সেখানে গিয়েছিল, সেসব কুকুরও মারা যায়।
এখানকার মৃত্যু যাত্রা অনেকটা চক্রের মতো চলতে থাকে। বসন্তের সময় এক প্রকার ছোট চড়ুই পাখি মারা যেতে থাকে। মৃত পাখিদের দেহের গন্ধে আকৃষ্ট হয় শিয়াল, ভলভেরিন, ভালুক, কাক এবং গোল্ডেন ঈগল এবং খাদ্যের সন্ধানে এখানে পাড়ি জমায়। তবে এই লোভই তাদের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়। এখানে এসে একে একে সবাই মারা যায়।
গবেষণায় দেখা যায়, মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠার মূল কারণ এখানকার বিষাক্ত বাতাস। আগ্নেয়গিরির বিষাক্ত গ্যাসই এখানকার বাতাসকে এতটা বিষাক্ত করে তুলেছে। এই বিষাক্ত গ্যাসের কারণে এখানে জীবনধারণ একেবারেই অসম্ভব। প্রধানত হাইড্রোজেন সালফাইড, কার্বন ডাই অক্সাইডের মতো গ্যাসের উপস্থিতিই এখানকার বাতাসকে বিষাক্ত করে তুলেছে।
কারো কারো মতে উপত্যকায় গ্যাসের উপাদানগুলো আংশিক পক্ষাঘাত সৃষ্টি করতে পারে, এর ফলে প্রাণীগুলো নড়াচড়া বা চলাফেরা করতে পারে না। তবে এটি এখনও প্রমাণিত হয়নি। গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরাও এই গ্যাসে আক্রান্ত হয়। আর এর প্রভাবে তাদের মাথা ব্যথা, দুর্বলতা, জ্বর, ঝিমুনি ভাব দেখা দেয়। তবে তারা উঁচুস্থানে যেখানে বায়ু প্রবাহ আছে সেখানে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসের প্রভাব কমে যায়।