পুঁজিবাজারে ‘আসছে’ সৌদি আরামকো
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল উৎপাদক কোম্পানি সৌদি আরামকো। নিজ দেশের পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে- এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই কোম্পানি।
বিবিসির এক খবরে বলা হচ্ছে, দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ ব্যাপারে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বিশ্বের মোট রিজার্ভের ১৫ শতাংশেরও বেশি বা প্রায় ২৬৫ বিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আছে এই কোম্পানিতে। বর্তমান তেল বাজারে ধস নামার কারণে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ায় বাজার থেকে অর্থ তুলতে এমন উদ্যোগ নিচ্ছে আরামকো।
গত দেড় বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০৭ ডলার থেকে নেমে এসেছে ৩৩ ডলারে। এতে সবচেয়ে বেগ পোহাতে হচ্ছে সৌদি আরবে। কারণ দেশটির মোট আয়ের ৭০ শতাংশ আসে এই তেল থেকে। তেলের বাজার খরায় গত বছরে ১০ হাজার কোটি ডলারের ঘাটতি বাজেট গুণতে হয়েছে দেশটির।
অনেকেই বলছেন, সৌদি আরব এখন অর্থনৈতিক ‘বোমার’ মুখে পড়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ আশঙ্কা করে বলেছে, এ অবস্থা শিগগির উত্তোরণ না হলে তেল সমৃদ্ধ এ দেশটি আগামী ৫ বছরের মধ্যে দেউলিয়া হতে পারে।
একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক এ সংকট থেকে মুক্তিতে এখন নানা ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে সৌদি আরব। ইতোমধ্যে জনগণের ওপর ভর্তুকি কমানোসহ তেলের দাম, পানি ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর কথা জানিয়েছে দেশটি। পুঁজিবাজার নিয়েও এখন ভাবছে দেশটির নীতি-নির্ধারকরা।
আরামকোকে পুঁজিবাজারে আনার পক্ষে- জানিয়ে মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার ব্যাপারে আমি বরাবরই উৎসাহী। আমি মনে করি, এতে সৌদি আরবের পুঁজিবাজার চাঙ্গা হওয়ার পাশাপাশি সৌদি আরামকোও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। এতে কোম্পানিটির স্বচ্ছতা আরও বাড়বে।
তবে কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে কী পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করবে- সে ব্যাপারে কিছু জানাননি তিনি।
এদিকে আজ শুক্রবার গলফ নিউজের এক খবরে বলা হয়েছে, দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাক্ষাতকারের একদিন পর কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়টি ভাবছে। এর মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা হবে তাও নিয়েও গবেষণা করছে।