পাক-রাশিয়া সম্পর্ক উন্নয়নে সাত দফা প্রস্তাব
আন্তার্জাতিক ডেস্ক:পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব তেহমিনা জাঞ্জুয়া বুধবার পাকিস্তান-রাশিয়া সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সাত দফা প্রস্তাবনা দিয়েছেন। তিনি বলেন যে, সাম্প্রতিক পাক-ভারত সামরিক অচলাবস্থা চলাকালে মস্কো যে অবস্থান গ্রহণ করেছিল, সেখান থেকেও বোঝা গেছে যে দুই দেশের সম্পর্ক এরই মধ্যে বদলে যেতে শুরু করেছে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “এই অংশীদারিত্বটা অনেক জরুরি এবং এর সম্ভাবনাও প্রচুর”। তিনি সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে সাত দফা রোডম্যাপ তুলে ধরেন।
স্ট্র্যাটেজিক ভিশন ইন্সটিটিউটে পাকিস্তান-রাশিয়া স্ট্র্যাটেজিক রিলেশান্স: প্রসপেক্টস ফর কোঅপারেশান শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সম্পর্ক উন্নয়নের প্রস্তাবনার মধ্যে পাকিস্তানের ব্যাংকগুলোতে আটকে থাকা রাশিয়ার ২০০ মিলিয়ন ডলারের বিষয়টি সুরাহার কথাও রয়েছে। আর্থিক দ্বিমতের কারণে রাশিয়ার এই অর্থগুলো সেখানে আটকে আছে। রয়েছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়; কৌশলগত সহযোগিতা এবং বোঝাপড়া গভীরকরণ; প্রতিরক্ষা সম্পর্কের অগ্রগতি; চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরে (সিপিইসি) রাশিয়ার অংশগ্রহণ; জনগণের পর্যায়ে সম্পর্কের উন্নয়ন; এবং শান্তি ও সমন্বিত উন্নয়নের জন্য সমমনা দেশগুলোর সাথে আঞ্চলিক জোটগতভাবে কাজ করা।
জাঞ্জুয়া বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এখন বিভিন্ন ইস্যুতে ১১টি দ্বিপাক্ষিক ফ্রেমওয়ার্কের উপর জোর দেয়া হচ্ছে। এই সব ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট সংলাপ; ঘন ঘন সম্মেলনকেন্দ্রীক সফর বিনিময়; সামরিক সম্পর্কের অগ্রগিত; আফগান শান্তির ব্যাপারে কৌশলগত সহযোগিতা এবং মাদক পাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমন্বয়ের বিষয়গুলো এসবের মধ্যে রয়েছে।
তিনি বলেন, “শীতল যুদ্ধের বোঝা দূর করে পাকিস্তান আর রাশিয়া একে অন্যের কাছাকাছি এগিয়ে এসেছে এবং পরস্পরের যোগাযোগ, উন্নততর বোঝাপড়া এবং কৌশলগত সমন্বয়ের উন্নতি করেছে”। তিনি বলেন যে, দুই দেশের সম্পর্কের বোঝাপড়া বদলে গেছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাপারে রাশিয়ার আরও সূক্ষ্ম নীতি গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিক অচলাবস্থা চলাকালে রাশিয়া মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলে পাকিস্তান সেটাকে স্বাগত জানায়”।
তিনি আরও বলেন, “উত্তেজনা প্রশমনে রাশিয়া তার ভূমিকা রেখেছে। তাদের ইতিবাচক ভূমিকা এবং এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য তাদের ভারসাম্যপূর্ণ আচরণকে আমরা স্বাগত জানাই”।
সেক্রেটারি জাঞ্জুয়া এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্সেই দেবভ উভয়েই আগামী জুনে কিরগিজস্তানে অনুষ্ঠিতব্য সাংহাই কোঅপারেশান অর্গানাইজেশান (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়টি উল্লেখ করেন।
মি. দেবভ বলেন যে, পাকিস্তান এসসিও’র সদস্য হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সংলাপ দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টি চালিয়ে নিচ্ছে ইন্টার-গভর্নমেন্টাল কমিশন অন ট্রেড, ইকোনমিক, সাইন্টিফিক এবং টেকনিক্যাল কোঅপারেশান। তিনি জানান, চলতি বছরের শেষ দিকে এই কমিশনের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।