দেউলিয়ার পথে নিউইয়র্ক, শহর ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ
ডেস্ক: ঋণ পরিশোধে অক্ষম হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। এর অর্থ সম্পূর্ণ দেউলিয়া হতে চলেছে নিউইয়র্ক। ঋণের দায়ে জর্জরিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ নাগরিকরা দলে দলে শহর ছেড়ে পালাচ্ছে। শহরটির সরকারি ব্যয় হয়ে উঠছে আকাশচুম্বী। শনিবার এ খবরটিই পত্রিকার শিরোনাম করেছে মার্কিন দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক পোস্ট।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, প্রায় ৪০ বছর আগে আব্রাহাম বিম মেয়র থাকাকালীন নিউইয়র্ক এমন অবস্থায় পড়েছিল। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সর্বাত্মক আর্থিক বিপর্যয়ের খুব কাছেই রয়েছে নিউইয়র্ক। গড়ে শহরটির প্রতিটি বাড়ির দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ ৮১ হাজার ডলারেরও বেশি।
মেয়র ডি ব্লাসিও নতুন বাজেটে বর্তমান বাজেটের (৮৯.২ বিলিয়ন) তিন বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ করতে চাইছেন। অর্থনৈতিক যোগাযোগ সংস্থা ভেস্টেড’র প্রধান অর্থনীতিবিদ মিল্টন এজরাটি বলেছে, ‘শহরটা বাজেট ঘাটতিতে আছে এবং অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে এটা খুবই কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। কর সমন্বয় করার কারণে আরও বেশি মানুষ শহর ছেড়ে চলে গেলেও একই অবস্থা হবে।’ ‘নিউইয়র্ক ইতিমধ্যেই খুব কঠিন অর্থ সংকটে আছে। কিন্তু, কোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতি দেখা দিলে একেবারে অসম্ভব অবস্থা তৈরি হবে,’ সতর্ক করে মিল্টন।
নিউইয়র্ক পোস্ট জানায়, ডি ব্লাসিও ২০২০ সালের প্রাথমিক বাজেটে অর্থ বাঁচানোর বিভিন্ন পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কিন্তু, অর্থ ব্যবস্থায় মন্দার মতো কোনো ধাক্কা লাগলে রক্তক্ষরণ কেউ ঠেকাতে পারবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা অর্থনৈতিক মন্দাও আসন্ন বলে মনে করছেন। আরও যেসব চমকপ্রদ সূচক নিউইয়র্কের দেউলিয়া হওয়ার শঙ্কা নির্দেশ করছে, সেগুলো হল, নিউইয়র্ক রাজ্য ও শহর ঋণের বোঝার দিক থেকে পুরো দেশের মধ্যে এক নম্বর। প্রপার্টি ট্যাক্স শহরটির মোট আয়ের প্রায় অর্ধেক।
শহরটির অন্যান্য আয়ের উৎসের তুলনায় এই ট্যাক্স দ্রুততর গতিতে বাড়তে থাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির মালিকরা কম ট্যাক্স লাগে এমন রাজ্যগুলোতে চলে যাচ্ছেন। নিউইয়র্কে সবচেয়ে বেশি আয় করেন এমন ১ শতাংশ মানুষ ট্যাক্স থেকে শহরটির যা আয় হয়, তার অর্ধেক দিয়ে থাকেন। আমেরিকান ইন্সটিটিউট ফর ইকনোমিক রিসার্চের অর্থনীতিবিদ পিটার সি আর্ল মনে করছে, নিউইয়র্ক পুরোপুরি দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় ঋণদাতারা শহরটিকে সাময়িকভাবে রক্ষা করলেও, নতুন ঋণ নেয়া এর জন্য কঠিন হয়ে পড়বে, যোগ করে সে।