আজ (৮ এপ্রিল) শুক্রবার সন্ধ্যায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এক যৌথ বিবৃতিতে উপরোক্ত বক্তব্য তুলে ধরা হয়। বিবৃতিদাতারা হলেন, হেফাজতে ইসলামের আমীর শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী, নায়েবে আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা তফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, মাওলানা আব্দুল মালেক হালিম, মাওলানা হাফেজ শামসুল আলম, মাওলানা মুফতী মুজাফফর আহমদ, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা সলিমুল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানী, মাওলানা মুনির আহমদ, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদি, মাওলানা মুঈনুদ্দীন রুহী, মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ি, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, মাওলানা মোস্তাক আহমদ, মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব প্রমুখ।
বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশ ও জাতি গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় সরকার ধর্মীয় শিক্ষাকে শুধুই সংকোচন করেনি, বরং ইসলামধর্ম বিষয়ক এবং মুসলিম সংস্কৃতির প্রতি উদ্দীপনামূলক গল্প-রচনা ও কবিতাসমূহও বাদ দিয়ে তদস্থলে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদের প্রতি উদ্দীপনামূলক বিভিন্ন রচনা, গল্প ও কবিতা যুক্ত করেছে। বর্তমানে স্কুল পাঠ্যপুস্তকে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুতত্ত্বের পাঠ দেওয়া হয়ে থাকে। তাদেরকে পড়ানো হয়, গরুকে মায়ের সম্মান দিয়ে ভক্তি করার, পাঁঠাবলির নিয়ম-কানুন, হিন্দু বীরদের কাহিনী, দেব-দেবির নামে প্রার্থনা এবং হিন্দুদের তীর্থস্থান ভ্রমণ করার। এর মাধ্যমে কোমলমতি কোটি কোটি মুসলমানের সন্তানকে ইসলাম বিদ্বেষী মানসিকতার পাশাপাশি নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদের শিক্ষা দিয়ে ঈমানহারা করার চেষ্টা চলছে। দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জাতিসত্ত্বার বিরুদ্ধে এটা ভয়াবহ ষড়যন্ত্র। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা চালু থাকলে কোটি কোটি মুসলমানের সন্তান ঈমানহারা হয়ে যাবে। এ নিয়ে অভিভাবক মহলে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠা তৈরী হয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে, স্কুল-কলেজে বর্তমানে যা পড়ানো হচ্ছে, তাতে তাদের সন্তানরা শেষ পর্যন্ত প্রকৃত মুসলিম থাকতে পারবে তো!
হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, চলমান উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ইসলামের প্রতি অবজ্ঞা এবং সুচতুরভাবে ইসলামী আক্বীদা-বিশ্বাস বিরোধী ও পীর মাশায়েখদের চরিত্রহননমূলক কয়েকটি প্রশ্নের খবর প্রকাশ হয়ে পড়লে এই উদ্বেগ আরো বেড়েছে। তারা বলেন, বিপুল মুসলিম জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশের পাবলিক পরীক্ষায় এ ধরণের প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কোন স্বাভাবিক বিষয় নয়। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং সাম্প্রদায়িকতা ও নাস্তিক্যবাদ উস্কে দিতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি মহল এই কাজ করেছে বলে আমাদের ধারণা।
বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে স্কুল-কলেজ পাঠ্যপুস্তক থেকে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদের বিষয়গুলো বাদ দিয়ে তদস্থলে বৃহৎ মুসলিম জনগোষ্ঠির ধর্মীয় চিন্তা ও আদর্শের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ইসলামী ভাবধারা এবং মুসলিম ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ মূলক রচনা, গল্প ও কবিতা যুক্ত করার দাবী জানান। পাশাপাশি প্রতিটি ক্লাসে বাধ্যতামূলকভাবে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে হক্কানী উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে ইসলামী শিক্ষার বই রচনা করে পাঠ্যসূচীভুক্ত করার দাবী জানান। বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, সরকার নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদের শিক্ষায় ভরপুর বিদ্যমান পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও ইসলাম বিরোধী শিক্ষানীতি পরিহার না করলে, উলামা-মাশায়েখের নেতৃত্বে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্রসমাজ এবং সাধারণ তৌহিদী জনতার অংশগ্রহণে সম্মিলিতভাবে দূর্বার কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলে দাবী পুরণে বাধ্য করা হবে।
বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ইসলামী শিক্ষা, আদর্শ ও ধর্মীয় চেতনাবোধ ধ্বংস করে এ দেশে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা ও ভোগবাদিতা বিস্তারের এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে গত কয়েক বছর ধরে। উলামা-মাশায়েখের বিরুদ্ধে নানা নেতিবাচক অপপ্রচার চালিয়ে গোটা আলেম সমাজকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চলছে। সংবিধান থেকে মহান আল্লাহর উপর আস্থা-বিশ্বাসের ধারা বিলোপ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মনিরপেক্ষপতা প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়েই এই ষড়যন্ত্রের যাত্রা শুরু। এরপর ইসলামের উপর সবচেয়ে বড় আঘাত হানা হয়েছে নাস্তিক্যবাদি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রবর্তন এবং সংস্কৃতির নামে নগ্নপনা ও বেহায়াপনা তথা ভোগবাদিতা বিস্তারের মাধ্যমে।
তারা বলেন, দেশের স্কুল-কলেজ ও ইউনির্ভার্সিটিগুলোতে কোটি কোটি মুসলমানের সন্তান কী পড়ছে, অভিভাবকরা জানেন না। ইসলাম ও মুসলমানদেরকে কটাক্ষ করে যারা নিয়মিত লেখালেখি করে, তাদের লেখা প্রায় প্রত্যেক শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত গল্প ও কবিতার সংখ্যা ১৯৩টি। এর মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক্যবাদিদের লেখার সংখ্যা হলো ১৩৭টি। অবশিষ্ট লেখার মধ্যেও ইসলামী ভাবধারার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কোন লেখা নেই। জাতীয় শিক্ষাবোর্ডসহ অন্যান্য সকল বোর্ডের নিয়ন্ত্রণমূলক গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষপদগুলোতে মুসলমানদেরকে বাদ দিয়ে সংখ্যালঘুদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে হেফাজতের বিবৃতিতে একটি পরিসংখ্যান দিয়ে উল্লেখ করা হয় যে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন নারায়ন চন্দ্র পাল, পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সচিব হচ্ছেন বজ্রগোপাল ভৌমিক, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হলেন ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ্র, একই বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হচ্ছে তপন কুমার সরকার, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন প্রফেসর ইন্দোভূষণ ভৌমিক, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন ডা. দিলীপ কুমার রায়, প্রথম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণি, তৃতীয় শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের সমন্বয়ক হলেন উত্তম কুমার ধর, ৪র্থ শ্রেণি, ৫ম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ের সমন্বয়ক হলেন শুভাশিষ চক্রবর্তী, বাংলা ব্যকরণ ও নির্মিতি ৬ষ্ঠ শ্রেণির প্রধান সমন্বয়ক হলেন গৌরাঙ্গ লাল সরকার এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অধিকাংশ বইয়ের ছবি অংকনকারী হচ্ছেন সুদর্শন বাছার। এছাড়াও গত বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের দীর্ঘ দিনের একান্ত সচিব ছিলেন মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ। ৯২ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশে এটা ষড়যন্ত্রের আলামত।
বিবৃতিতে হেফাজত শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা অবশ্যই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে। সংখ্যালঘুদের সার্বিক নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা ও নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত হোক, এটা আমরাও চাই। প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন পদে আনুপাতিক হারে সংখ্যালঘুদের উপস্থিতি থাকার বিরোধী নই আমরা। কিন্তু রহস্যজনকভাবে জাতীয় শিক্ষাকার্যক্রমসহ সরকারী বিভিন্ন শীর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ পদে উচ্চহারে সংখ্যালঘুদের নিয়োগ ও পদায়ন অবশ্যই উদ্বেগ তৈরী হওয়ার মতো বিষয়।
হেফাজতের ইসলামের বিবৃতিতে স্কুল পাঠ্য বইয়ে কী কী বিষয়ের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে এবং কী কী বিষয়ের লেখা যুক্ত করা হয়েছে, তার একটি তালিকাও সন্নিবেশিত করা হয়।
পাঠ্যপুস্তকে বাংলা বই থেকে বাদ দেওয়া বিষয় গুলো হচ্ছে-
১) দ্বিতীয় শ্রেণী- বাদ দেওয়া হয়েছে ‘সবাই মিলে করি কাজ’ শিরোনামে মুসলমানদের শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
২) তৃতীয় শ্রেণী- বাদ দেওয়া হয়েছে ‘খলিফা হযরত আবু বকর’ শিরোনামে একটি সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
৩) চতুর্থ শ্রেণী- খলিফা হযরত ওমর এর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত বাদ দেওয়া হয়েছে।
৪) পঞ্চম শ্রেণী- ‘বিদায় হজ্জ’ নামক শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত বাদ দেওয়া হয়েছে।
৫) পঞ্চম শ্রেণী- বাদ দেওয়া হয়েছে কাজী কাদের নেওয়াজের লিখিত‘শিক্ষা গুরুর মর্যাদা’ নামক একটি কবিতা। যাতে বাদশাহ আলমগীর মহত্ব বর্ণনা উঠে এসেছে। এবং শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে আদব কেমন হওয়া উচিত, তা বর্ণনা করা হয়েছিলো।
৬) পঞ্চম শ্রেণী- শহীদ তিতুমীর নামক একটি জীবন চরিত বাদ দেওয়া হয়েছে। এ প্রবন্ধটিতে মুসলিম নেতা শহীদ তিতুমীরের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্যে সংগ্রামের ঘটনার উল্লেখ ছিলো।
৭) ষষ্ঠ শ্রেণী- ড. মুহম্মদ শহীদ্ল্লুাহ লিখিত ‘সততার পুরষ্কার’ নামক একটি ধর্মীয় শিক্ষনীয় ঘটনা বাদ দেওয়া হয়েছে।
৮) ষষ্ঠ শ্রেণী- মুসলিম দেশ ভ্রমণ কাহিনী- ‘নীলনদ আর পিরামিডের দেশ’ নামক মিসর ভ্রমণের উপর লেখাটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
৯) ষষ্ঠ শ্রেণী- মুসলিম সাহিত্যিক কায়কোবাদের লেখা ‘প্রার্থনা’ নামক কবিতাটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
১০) সপ্তম শ্রেণী- বাদ দেয়া হয়েছে ‘মরু ভাস্কর’ নামক শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
১১) অষ্টম শ্রেণী- বাদ দেওয়া হয়েছে‘বাবরের মহত্ত্ব’ নামক কবিতাটি।
১২) অষ্টম শ্রেণী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বেগম সুফিয়া কামালের লেখা ‘প্রার্থনা’ কবিতা।
১৩) নবম-দশম শ্রেণী- সর্বপ্রথম বাদ দেওয়া হয়েছে মধ্যযুগের বাংলা কবি শাহ মুহম্মদ সগীরের লেখা ‘বন্দনা’ নামক ইসলাম ধর্মভিত্তিক কবিতাটি।
১৪) নবম-দশম শ্রেণী- এরপর বাদ দেওয়া হয়েছে মধ্যযুগের মুসলিম কবি ‘আলাওল’-এর ধর্মভিত্তিক ‘হামদ’ নামক কবিতাটি।
১৫) নবম-দশম শ্রেণী- আরো বাদ দেওয়া হয়েছে মধ্যযুগের মুসলিম কবি আব্দুল হাকিমের লেখা বঙ্গবাণী কবিতাটি।
১৬) নবম-দশম শ্রেণী- বাদ দেওয়া হয়েছে শিক্ষণীয় লেখা ‘জীবন বিনিময়’ কবিতাটি। কবিতাটি মোঘল বাদশাহ বাবর ও তার পুত্র হুমায়ূনকে নিয়ে লেখা।
১৭) নবম-দশম শ্রেণী- বাদ দেওয়া হয়েছে কাজী নজরুল ইসলামের লেখা বিখ্যাত ‘উমর ফারুক’ কবিতাটি।
উপরের বিষয়গুলো বাদ দিয়ে নতুন স্কুল পাঠ্য বইয়ে নীচের বিষয়গুলো যুক্ত করা হয়েছে-
১) পঞ্চম শ্রেণী- স্বঘোষিত নাস্তিক হুমায়ূন আজাদ লিখিত ‘বই’ নামক একটি কবিতা, যা মূলতঃ মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পবিত্র কুরআন বিরোধী কবিতা।
২) ষষ্ঠ শ্রেণী- প্রবেশ করানো হয়েছে ‘বাংলাদেশের হৃদয়’ নামক একটি কবিতা। যেখানে রয়েছে হিন্দুদের ‘দেবী দূর্গা’র প্রশংসা।
৩) ষষ্ঠ শ্রেণী- সংযুক্ত হয়েছে ‘লাল গরুটা’ নামক একটি ছোটগল্প। যা দিয়ে কোটি কোটি মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে শেখানো হচ্ছে গরু হচ্ছে মায়ের মত, অর্থাৎ- হিন্দুত্ববাদ।
৪) ষষ্ঠ শ্রেণী- অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ভারতের হিন্দুদের তীর্থস্থান রাঁচি’র ভ্রমণ কাহিনী।
৫) সপ্তম শ্রেণী- ‘লালু’ নামক গল্পে মুসলিম ছাত্রছাত্রীদেরকে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে পাঁঠাবলির নিয়ম কানুন।
৬) অষ্টম শ্রেণী- পড়ানো হচ্ছে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ ‘রামায়ণ’-এর সংক্ষিপ্তরূপ।
৭) নবম-দশম শ্রেণী- প্রবেশে করেছে ‘আমার সন্তান’ নামক একটি কবিতা। কবিতাটি হিন্দুদের ধর্ম সম্পর্কিত ‘মঙ্গল কাব্যে’র অন্তর্ভুক্ত, যা দেবী অন্নপূর্ণার প্রশংসা ও তার কাছে প্রার্থনাসূচক কবিতা।
৮) নবম-দশম শ্রেণী- অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ভারতের পর্যটন স্পট ‘পালমৌ’ এর ভ্রমণ কাহিনী।
৯) নবম-দশম শ্রেণী- পড়ানো হচ্ছে ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ শিরোনামে বাউলদের বিকৃত যৌনাচারের কাহিনী।
১০) নবম-দশম শ্রেণী- ‘সাকোটা দুলছে’ শিরোনামের কবিতা দিয়ে ৪৭-এর দেশভাগকে হেয় করা হয়েছে, যা দিয়ে কৌশলে ‘দুই বাংলা এক করে দেওয়া’ অর্থাৎ বাংলাদেশকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হতে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
১১) নবম-দশম শ্রেণী- প্রবেশ করেছে ‘সুখের লাগিয়া’ নামক একটি কবিতা, যা হিন্দুদের রাধা-কৃষ্ণের লীলাকীর্তণ।
১২) প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে দেওয়া হয়েছে ‘নিজেকে জানুন’ নামক যৌন শিক্ষার বই।
বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, স্কুল-কলেজে বিদ্যমান পাঠ্যবই বহাল থাকলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম শুধুই ঈমানহারা হয়ে গড়ে ওঠবে না, বরং ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদি ও হিন্দুত্ববাদি মানসিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠবে। ৯২ ভাগ মুসলিম জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশে এটা কোনভাবেই চলতে দেয়া যায় না, চলতে দেয়া হবে না। সরকার জাতীয় শিক্ষা নীতি থেকে ইসলাম বিরোধী ও নাস্তিক্যবাদি নীতি পরিহার না করলে উলামা-মাশায়েখের নেতৃত্বে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্রসমাজ ও সাধারণ তৌহিদী জনতার অংশগ্রহণে সম্মিলিতভাবে কঠোর দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। হেফাজত নেতৃবৃন্দ মসজিদের ইমাম, খতীব এবং হেফাজতের ইসলামের নেতাকর্মীকে এ বিষয়ে জনগণকে অবহিত করে ব্যাপক গণমত গড়ে তোলার আহ্বান জানান। পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মুসলিম জাতিসত্ত্বার পরিচিতি ও ঈমান রক্ষার তাগিদে অভিভাবক মহল ও দেশবাসীকে এ ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামীতে আমাদের দাবী আদায়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি থাকতে হবে।#