রাজধানীর সড়কে বাড়ছে পরিবহন -ঘাটে ঘরমুখো মানুষের ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর সড়কগুলোতে গত ক’দিনের তুলনায় পরিবহন বেড়ে গেছে। ১০ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দিলেও চতুর্থ দিনেই অনেকে নিজ নিজ প্রয়োজনে ব্যক্তিগত পরিবহন নিয়ে বেরিয়ে গেছে। রাস্তায় বেড়ে গেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এবং প্যাডেলচালিত রিকশাও। সেসব বাহনে চড়ে গন্তব্যে ছুটছে লোকজন।

রাজধানীর গাবতলী, কাজীপাড়া, শ্যামলী, আসাদগেট, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের চাইতে গতকাল রোববার সরকারি ছুটির চতুর্থ দিনে রাস্তায় ব্যক্তিগত পরিবহনের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। বিশেষ ছুটির মধ্যেও জীবিকা অর্জনের জন্য মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বা পায়ে হেঁটে বেরিয়েছে। গণপরিবহন না পেয়ে অনেককে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে ছুটতে দেখা যায়।

কয়েকটি পয়েন্টে দেখা গেছে, বাসস্ট্যান্ডে ভাড়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, রিকশা ও প্রাইভেটকার দাঁড়িয়ে রয়েছে।

গাবতলীতে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষারত ইব্রাহিম মিয়া বলেন, পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হয়েছি। ঘরে বসে থাকলে কেউ খাবার দিয়ে যাবে না, মাস শেষে বাড়ি ভাড়া দিতে হবে। পরিবারের খরচ তো আর বন্ধ থাকছে না, এ কারণে সকাল ৭টায় সিএনজি নিয়ে বের হয়ে ৪০০ টাকা আয় করেছি। রাত পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে যা আয় হয় তা নিয়ে বাড়ি ফিরব।

শ্যামলী বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমান ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, বাড়ি ভাড়া দেয়ার সময় হয়েছে, সংসারে স্ত্রী ও দুই সন্তানের ভরণ-পোষণ করতে হয়। ঘরে বসে থাকলে সবাইকে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে সকাল ৮টায় বের হয়েছি। এ পর্যন্ত ৩০০ টাকা আয় হয়েছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত আয় করে বাসায় ফিরব।

পাশেই শামীম নামে এক রিকশা চালক জানান, সরকার সব বন্ধ ঘোষণা করলেও প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রিকশা চালান তিনি। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টাকা আয় করে বাসায় ফিরছেন। পেটের দায়ে প্রতিদিন ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে তাকে।

পাটুরিয়ায় ঘরমুখো মানুষের ভিড়

অন্যদিকে, সরকারের ঘোষিত ছুটিতে বাড়ি ফিরছে সাধারণ মানুষ। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গত তিনদিন ধরে জরুরি পণ্যবোঝাই ট্রাক ছাড়া সব প্রকার যাত্রীবাহী পরিবহন পারাপার বন্ধ রাখে বিআইডব্লিউটিসি। তবে গতকাল রোববার সাধারণ যাত্রীর ঢল নেমেছে পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায়।

গাজীপুর থেকে আসা মাদারীপুরগামী যাত্রী রবিউল বলেন, গাজীপুর থেকে তিনটি গাড়ি বদল করে নবীনগর আসছি পরে ৪০০ টাকা দিয়ে প্রাইভেটকারে পাটুরিয়া ঘাটে এসেছি। এখন ফেরি পার হতে পারলে বেঁচে যাই। গ্রামের বাড়ির সবাই অনেক চিন্তায় আছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউসিসি) আরিচা ঘাট সেক্টরের ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, পাটুরিয়া ঘাটে বর্তমানে জরুরি পণ্যবোঝাই ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা থেকে আসা যাত্রীদের চাপ রয়েছে ঘাট এলাকায়, তারাও ফেরিতে নৌরুট পাড়ি দিচ্ছে।