ব্যাংক থেকে বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছে বিদেশিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকগুলোর ওপর আস্থা রাখতে পারছে না বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। যে কারণে ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করে বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছে পুঁজিবাজারের বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। গত এক বছরে বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৮ কোটি ৯০ লাখের বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে তারা। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোতে বিদেশিদের বিনিয়োগের চিত্র পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকরা বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত চালাক। তারা যেখানে লাভ বেশি দেখে, সেখানে বিনিয়োগ করে এবং মুনাফা তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। দেশের ব্যাংকখাত দীর্ঘদিন ধরেই এক প্রকার সমস্যার মধ্যে রয়েছে। খেলাপি ঋণে জর্জরিত বেশিরভাগ ব্যাংক। পরিচালন মুনাফাও ভালো হচ্ছে না। এ কারণে ব্যাংকের প্রতি বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাচ্ছেনা।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ঢাকা ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এবং রূপালী ব্যাংকে বিদেশিদের বিনিয়োগ নেই। বাকি ২৬টি ব্যাংকের শেয়ারে বিদেশিদের বিনিয়োগ রয়েছে।

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে এই ব্যাংকগুলোর প্রায় ১২১ কোটি ৫০ লাখ ৮৬ হাজার শেয়ার বিদেশিদের কাছে রয়েছে। এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে বিদেশিদের কাছে ব্যাংকের শেয়ার ছিল প্রায় ১৬০ কোটি ৪১ লাখ ১৩ হাজার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন ব্যাংকের ৩৮ কোটি ৯০ লাখ ২৭ হাজার শেয়ার ছেড়ে দিয়েছে।

বিদেশিদের ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত চালাক। তারা যেখানে লাভ বেশি দেখেন সেখানে বিনিয়োগ করে। বর্তমানে শেয়ারবাজারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও ব্যাংকের শেয়ার দাম কিন্তু সেভাবে বাড়েনি। তাছাড়া ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে, তার মধ্যেই অতিরিক্ত তারল্য থেকে যাচ্ছে। আবার পরিচালন মুনাফা বা কর-পরবর্তী মুনাফা কোনোটাই ব্যাংকের খুব ভালো হচ্ছে না। এ কারণেই হয়তো বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভাবছে আপাতত ব্যাংকের শেয়ার থেকে সরে দাঁড়ানো ভালো। এইটাই বিদেশিদের ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করার প্রধান কারণ।