পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান শেষ, গ্রেপ্তার ১৪৫৫২

ঢাকা: জঙ্গিদমনে সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন আর গণগ্রেপ্তারের অভিযোগের মধ্যেই শেষ হলো পুলিশে সপ্তাহব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান।

আগাম ঘোষণা দিয়ে ১০ জুন থেকে দেশজুড়ে সপ্তাহব্যাপী জঙ্গিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয় আর তা শেষ হয় আজ শুক্রবার ভোরে।

অভিযানে শেষ পর্যন্ত কত গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নিয়ে পুলিশ গত দুদিন আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য দেয়নি। তবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল আহছান লস এঞ্জেলেস টাইমসকে জানান, অভিযানে ১৪৫৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি,তাদের মধ্যে ১৭৬ জন সন্দেহভাজন জঙ্গি।

এবারের অভিযানে দুর্ধর্ষ কোনো জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। এমনকি গত ১৮ মাসে উগ্রপন্থিদের ৪৭টি হামলায় যে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন, তাতে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তারের কথাও পুলিশ জানাতে পারেনি।
ফলে এবারের ‘জঙ্গিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান’ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠেছে।

প্রথমত, আগাম ঘোষণা নিয়ে এমন প্রক্রিয়ায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নজির নেই বললেই চলে। দ্বিতীয়ত, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গিয়ে অন্যান্য মামলায় ১২ সহস্রাধিক ব্যক্তিকে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ আছে, অনেক এলাকা থেকে যাদের করা হয়েছে, তাদের সবাইকে আদালতে হাজির করা হয়নি। অনেকে থানা বা পুলিশের হেফাজত থেকে টাকার বিনিময়ে ‘উধাও হয়ে গেছে। এমনকি অনেককে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা মামলা ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঈদের আগে সাঁড়াশি অভিযানে কোনো কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ‘বাণিজ্য’ করার অভিযোগও উঠেছে।

অভিযোগ উঠেছে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করেই এবারের অভিযানে ৫৪ ধারার লাগামহীন প্রয়োগ ঘটেছে। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৬০২৬ জনই পরোয়ানাভুক্ত আসামি।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে অনেক ওয়ারেন্ট তামিল হয়নি।

অভিযানে অনেক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, সন্ত্রাসী, মলম ও অজ্ঞান পার্টির সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। তাই গ্রেপ্তারের সংখ্যাটি বড় দেখায়। তর দাবি, অভিযানে ৭৫ ভাগ সফলতা এসেছে। ছোটখাটো যেসব অভিযোগ এসেছে, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন বলেন, এবারের অপারেশনে ১৩ হাজারের উপরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার মধ্যে জঙ্গি সন্দেহে আনুমানিক দু’শ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এত বড় একটা সংখ্যার বিপরীতে যখন দু’শ মানুষ গ্রেপ্তার হয় জঙ্গি সন্দেহে, তখন আমাদের মনে সন্দেহ জাগে যে তাহলে এই অপারেশনের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?