পাকিস্তানের সাথে সৌদি আরব, তুরস্ক, চীন, রাশিয়া : বন্ধু হারাচ্ছে ভারত!

ডেস্ক: ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের রিপোর্টে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসপ্রবণ রাষ্ট্র হিসাবে গ্রে তালিকায় রাখা অবশেষে সম্ভব হলেও পাকিস্তানকে যেভাবে চীন, সৌদি আরব আর তুরস্কের সঙ্গে রাশিয়াও বাঁচানোর চেষ্টা করছে তা ভারতের পক্ষে সুসংবাদ নয়। সৌদি আরব, তুরস্ক আর চীন সরাসরি পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়ার প্রস্তাবের প্রাথমিক বিরোধিতা করলেও রাশিয়াও পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর আভাস দিচ্ছে আগাগোড়া। এটাই ভারতের জন্য একটি বৃহত্তর আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে উপমহাদেশ ও পশ্চিম এশিয়ায় একটি বিশেষ অক্ষশক্তির কাঠামো তৈরি হচ্ছে। চীন যার ভরকেন্দ্র। চীন ও রাশিয়া উভয়ের সামরিক সহায়তা ও সৌদি আরবের আর্থিক সাহায্য যদি পাকিস্তানের পিছনে থাকে তাহলে কৃটনৈতিক সমীকরণের একটি নতুন পর্ব শুরু হবে।

বিগত ৭০ বছরের মধ্যে এই প্রথমবার গত বছর পাকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়া সামরিক বাহিনীর যৌথ মহড়া করেই বুঝিয়ে দিয়েছে মস্কোর অভিমুখ বদলাচ্ছে। এরপর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়ার আচরণ ভারতের প্রতি পক্ষপাতযুক্ত ছিল না। যে অবস্থানটি আগে ছিল অত্যন্ত প্রকট। এর আগে যে কোনো ভারতমুখী প্রস্তাব অথবা ভারতের কোনো অবস্থানকে সর্বাগ্রে সমর্থন দিয়েছে রাশিয়া। ভারত যতই বিগত বছরগুলোকে অনেক আগ্রাসীভাবে আমেরিকা ও ইসরাইলের দিকে সরে গেছে এবং সম্পর্ক অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়েছে, ততই রাশিয়ার মনোভাব হয়েছে শীতল। আর তার নবতম প্রতিফলন দেখা গেল পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের প্রশ্রয়দাতা রাষ্ট্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে মূলত আমেরিকা ও অন্য পশ্চিমী দেশগুলোর উদ্যোগকে যেভাবে প্রাথমিকভাবে ভ-ুল করে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে।

চীন ও সৌদি আরবের এই যুগলবন্দীর আর একটি উদাহরণ সাম্প্রতিক মালদ্বীপ ক্রাইসিস। বিগত বছরগুলিতে মালদ্বীপে নতুন সরকারের আগমনের পর থেকে চীন আর সৌদি আরবের লগ্নি এবং ওই দ্বীপপূঞ্জের প্রশাসনে হস্তক্ষেপ অনেক বেশি আগ্রাসী হয়েছে। সম্প্রতি মালদ্বীপে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরই দেশে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে মালদ্বীপ সবার আগে দুটি দেশে নিজেদের বিদেশমন্ত্রকের প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। চীন ও সৌদি আরবে। এবং প্রথমেই ভারতে পাঠানো হয়নি দূত। উল্টা ভারতীয় সাংবাদিক ও নাগরিক কয়কজনকে ভারতে জোর করে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তারপর মালদ্বীপ চেয়েছিল ভারতে দূত পাঠাতে। তখন আবার ভারত সেটি কৌশলে প্রত্যাখ্যান করে। তবে সৌদি আরব যেভাবে প্রকাশ্যে ও প্রকটভাবে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে তারপর উদ্বেগ আরো বেড়েছে। যদিও পাকিস্তান সৌদির পুরানো বন্ধু। পাকিস্তানের এক হাজার সেনা সৌদি আরবের সেনাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আর তারপর আরো ১৫০০ সেনা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পাকিস্তান।

অথচ সৌদি আরব ভারতের সঙ্গে বিগত কয়েক বছরে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী একঝাঁক চুক্তি সম্পাদন করে আশ্বাস দিয়েছিল সন্ত্রাসের লড়াইতে তারা ভারতের পাশে থাকবে। ভারত কী ক্রমেই বন্ধু হারাচ্ছে? প্রশ্ন উঠছে।