আইএস তৈরি করে ইহুদীরা মুসলমান দিয়ে মুসলমান ধ্বংস করছে : আইজিপি
ঢাকা : ইসলামের বিরুদ্ধে ইহুদিরা ষড়যন্ত্র করছে। আইএস এর মতো সংগঠন তৈরি করে মুসলমানদের দিয়ে মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে। আইএস তৈরি করেছে ইহুদিরা। এখন অবশ্য আইএস এ বিরুদ্ধে কথা বলছে। কিন্তু কারা তাদের সাহায্য করছে। কারা তাদের অস্ত্র দিয়ে এটা সবার জানা।’
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘দৈনিক আমার কাগজ’ এর ১৪ বছর পদার্পণ উপলক্ষে ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন : কমিউনিটি পুলিশিং ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরির্দশক এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ব্লগাররা লেখনির মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে। আর জঙ্গিরা মানুষ হত্যা করে সমাজের, রাষ্ট্রের, মানবতার ক্ষতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক।
আইটিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ তরুণদের অবদান স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তরুণদের কেউ কেউ সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ঠ আবার কেউ কেউ মুক্ত চিন্তায় আদর্শিত। অতিরিক্ত মুক্তচিন্তা করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছে।’ ব্লগাররা ইসলাম ধর্ম ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে যে ধরনের কটূক্তি করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না বলেও যোগ করেন তিনি।
সরাসরি জান্নাতের লোভে তরুণরা কেন জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে তা খুঁজে বের করতে হবে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘আগে একটা ধারণা ছিল সমাজের দরিদ্র ও মাদরাসার ছেলেরা জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এ ধারণা বিগত কয়েকটি ঘটনায় ভুল প্রমাণিত হয়েছে। শিক্ষিত ছেলেরাও জঙ্গি হয়ে উঠছে। শিক্ষিত ছেলেরা সরাসরি জান্নাতে যাওয়ার লোভে জঙ্গি হচ্ছে। কেন তারা এমনটা ভেবে ভুল করছে এটাই আমাদের চিন্তার বিষয়। এই ক্ষেত্রে আমাদের কাজ করতে হবে।’
বিভিন্ন সময়ে আটক জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা শরিয়া আইনে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করবে। তারা মানুষের তৈরি আইন বা সংবিধান মানে না। এখানেই তাদের সমস্যা। তারা জিহাদ করবে মুশরিক, মুরতাদ, মুনাফিক, কাফেরদের বিরুদ্ধে। এই জঙ্গিদের বোঝানো হয়েছে এই চার শ্রেণির লোকদের হত্যা করলে কোনো কোনো বিচার হবে না। সরাসরি জান্নাতে চলে যাবে। এই জান্নাতের স্বপ্ন দেখে জিহাদি হচ্ছে। মুসলমানদের হত্যা করছে।’
এসব তরুণ ‘হিপনোটাইজ’ করে ফেলা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর আর বাঁচতে চায় না। তারা বলে, আমাকে মেরে ফেলেন, জান্নাতে চলে যাবো। আপনারা তাগুতি শক্তি, আপনারা মুরতাদ, আপনারা দোজখে যাবেন।’
জঙ্গিবাদের কেউ একবার মোটিভেট হয়ে গেলে তাকে আর ফেরানো যায় না উল্লেখ করেন তিনি। আটকদের আইজিপি অনেকবার বুঝিয়েও কোনো ফল পাননি। তবে মোটিভেশন হওয়ার আগেই তরুণদের নিয়ে কাজ করার কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর এটা শুরু করতে হবে পরিবার থেকে। পিতা-মাতার তার সন্তানের প্রতি তীক্ষ্ণ নজরদারি করতে হবে। আত্মার সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানেরও দায় দায়িত্ব আছে।’
ধর্মের অপব্যাখ্যা রুখতে আলেমদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শহিদুল হক। তিনি বলেন, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তরুণদের বিপথগামি করা হচ্ছে। সবার মাঝে তাই ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে। আর এক্ষেত্রে আলেমরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন।’
এসময় রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয় ঐক্য নিয়েও কথা বলেন আইজিপি। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য একসাথে বসে করতে হবে এমনটা নয়। সকল রাজনৈতিক দলসহ সবাই যে যার অবস্থান থেকে প্রতিহত করলেই হলো। এর জন্য একসাথে বসে জাতীয় ঐক্য গঠনের কোনো প্রয়োজন নেই।’
অনুষ্ঠানে ‘আমার কাগজ’ এর সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি হাজী আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, তথ্য প্রযু্ক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা একেএম শামীম চৌধুরী বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি মনজুরুল হাসান বুলবুলসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।