বাংলাদেশে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডে ইসরাইলের সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা কতটুকু?

ডেস্ক: বাংলাদেশে সম্প্রতি একের পর এক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ইসরাইলি গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল (সোমবার) এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ ইঙ্গিত দেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সত্যিই কি বাংলাদেশে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ইসরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ সম্পৃক্ত থাকতে পারে?

বিশ্লেষকেরা বলছেন, একটি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেহেতু এ ধরনের কথা বলেছেন, সেহেতু অবশ্যই তার কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। এছাড়া সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সম্পৃক্ততার বিষয়টি এখন প্রায় সবার কাছেই স্পষ্ট। কারণ সিরিয়ায় প্রকাশ্যেই দায়েশ বা আইএসআইএলসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে অস্ত্রসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরাইল। সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে আহত জঙ্গিদেরকে ইসরাইলের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেয়ার বহু ছবিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়ার বিষয়টি ইসরাইল নিজেও অস্বীকার করে না। কাজেই ইসরাইল ও দায়েশের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি এখন আর কারো কাছেই অজানা নয়। এ অবস্থায় বাংলাদেশে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের পরপরই দায়েশ বা আইএসআইএল সেগুলোর দায় স্বীকার করছে। যেহেতু দায়েশের সঙ্গে আগে থেকেই ইসরাইলের সম্পর্ক রয়েছে, সেহেতু ইসরাইলের মদদে বাংলাদেশেও তারা হত্যাকাণ্ড চালিয়ে থাকতে পারে। বাংলাদেশের সরকার বলছে সেদেশে আইএসআইএল বা দায়েশ নেই এবং এসব হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আইএসআইএল এবং জেএমবি’র মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই।

আইএসআইএল’র অনুকরণে বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে। নাম ভিন্ন হলেও এসব গোষ্ঠীর লক্ষ্য ও আদর্শ অভিন্ন এবং আইএসআইএলের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ রয়েছে। আফ্রিকায় দায়েশের লোকজন তৎপরতা চালাচ্ছে ‘বোকো হারাম’ গোষ্ঠীর ব্যানারে। আসলে ইহুদিবাদী ইসরাইলের মতো শত্রু-দেশগুলো মুসলমানদের মধ্যে হানাহানি বাধিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব ও অবস্থানকে সুসংহত করতে চায়। তারা চায় মুসলমানরাই মুসলমানদের ধ্বংস করুক। বাংলাদেশও তাদের ষড়যন্ত্রের বাইরে নয়।

বিজ্ঞ আলেমরা মনে করেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও দায়েশই এখন ইসলামের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করছে। বিশ্বের মাঝে ইসলামকে বিকৃত করে তুলে ধরছে দায়েশ, আর সেটাকে অপব্যবহার করছে ইসরাইল ও আমেরিকাসহ মুসলিম বিদ্বেষী রাষ্ট্রগুলো। আইএসআইএল বা দায়েশের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্কের আরেকটি প্রমাণ হলো, ইহুদিবাদীরা মুসলমানদের প্রথম কেবলা দখল করে রাখার পাশাপাশি ফিলিস্তিনি মুসলিম ভাইদের নির্মমভাবে হত্যা অব্যাহত রাখলেও এর বিরুদ্ধে কিছুই বলছে না আইএসআইএল বা দায়েশ। বাংলাদেশের মুসলমানেরা শত্রুদের ষড়যন্ত্র উপলব্ধি করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধ আরও সোচ্চার হয়ে উঠবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।