এফডিআই ২০০ কোটি ডলার ছাড়াল

ঢাকা: সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রথমবারের মতো  ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে।

২০১৫ সালে বাংলাদেশে ২২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের (২.২৩ বিলিয়ন) এফডিআই এসেছে। যা ২০১৪ সালের তুলনায় ৪৪ শতাংশ বেশি। সে বছর ১৫৫ কোটি ১০ লাখ ডলার এফডিআই এসেছিল।

বুধবার মতিঝিলে বিনিয়োগ বোর্ডে আঙ্কটাডের ‘ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট-২০১৬’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যে এফডিআই এসেছে তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়।

প্রথম অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তাদের এই বিনিয়োগের পরিমাণ ৪ হাজার ৪২০ কোটি ৮০ লাখ (৪৪.২০বিলিয়ন) ডলার।

ভারতে গত বছর তার আগের বছরের চেয়ে এফডিআই বেড়েছে ২৭ শতাংশ।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি এফডিআই এসেছে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়াম খাতে। জ্বালানির এসব খাতে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৫৭ কোটি ৪০ লাখ ডলারের।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে টেক্সটাইল বা তৈরি পোশাক শিল্প খাত (আরএমজি); ৪৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন খাতে ২৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার, ব্যাংকিং খাতে ৩১ কোটি ডলার, ফুড প্রোডাক্টে ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার, কৃষি ও মৎস্য খাতে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং অন্যান্য খাতে ৫০ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে।

অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম ইসমাইল হোসেন।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে এফডিআই বেড়েছে ৩৮ শতাংশ বা ১ দশমিক ৭৬ ট্রিলিয়ন ডলার।

উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে এফডিআইর পরিমাণ ৭৬৫ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে, যা ২০১৪ সালের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি।

যুক্তরাষ্ট্র ৩৮০ বিলিয়ন ডলার এফডিআই করে প্রথম স্থানে রয়েছে। হংকং ১৭৫ বিলিয়ন ও চীন ১৩৬ বিলিয়ন করে তার পরের অবস্থার রয়েছে।

তবে আগামী বছর এফডিআই কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন ইসমাইল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে এফডিআই ১০ থেকে ১৫ ভাগ কমে যেতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতিতে ভঙ্গুরতা, প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া, কার্যকরি ট্যাক্স পলিসিসহ বেশকিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে এফডিআই কমতে পারে।’

অবশ্য নানা ধরনের নীতি সহায়তার কারণে ২০১৭ ও ১৮ সালে এফডিআই ভালো অবস্থানে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থনীতির অধ্যাপক ইসমাইল।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্ঠা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘এফডিআই ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর মাধ্যমে আমরা সাহস সঞ্চার করতে পেরেছি, যা আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।’

বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এস এ সামাদ বলেন, গত বছর কোনো রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল না। বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ ছিল।

এটি বিনিয়োগ বাড়ার একটা কারণ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খুব বেশি ঝুঁকি নেই। আর ঝুঁকি না থাকলে এফডিআই বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।’