‘সুশীল সমাজ’ কথাটি গালিতে পরিণত হয়েছে : আনু মুহাম্মদ
ঢাকা : যাদের প্রতি গণমানুষের অগাধ বিশ্বাস-ভরসা, যারা মানুষের কল্যাণার্থে সব সময় নিজেদের নিয়োজিত রাখার কথা, দেশের স্বার্থে জাতির স্বার্থে যাদের আপোসহীনভাবে কাজ করার কথা- সেই ‘কথিত সুশীল সমাজ’ও আজ বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে ‘সুশীল সমাজ’ কথাটিও এখন গালিতে পরিণত হয়েছে। শনিবার (০৪ মে) এক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎবন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের আয়োজনে ‘বাংলাদেশের গর্ভন্যান্স ও অরাষ্ট্রীয় ভূমিকা পালনকারী’ শীর্ষক দিনব্যাপী সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় মিডিয়ার গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মিডিয়ার দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের চেতনাকে জাগ্রত করা। কিন্তু মিডিয়া যদি সেভাবে কাজ না করে তাহলে দেশ ভয়ঙ্কর বিপদের সম্মুখিন হবে।’
সরকার কর্তৃক গৃহীত বাঁশখালির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব প্রকল্প আমাদের দেশ এবং জাতির জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছে। প্রকল্পগুলো বন্ধের ক্ষেত্রে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
সেমিনারে অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বেসরকারি সংস্থাগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। বেসরকারি সংস্থা, নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার কর্মী, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের মতামতের প্রতি গুরুত্ব দিলেই দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব। রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারণে সরকারের বাইরের শক্তিকে যুক্ত না করলে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।’
সেমিনারে ৫টি প্যানেলে ৩০টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। ১ম প্যানেলে তাত্ত্বিক ও ধারণাগত পর্যালোচনা; ২য় প্যানেলে নীতি প্রণয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা; ৩য় প্যানেলে গণপ্রতিরোধ ও বিকল্প এজেন্ডা নির্ধারণ; ৪র্থ প্যানেলে দায়বদ্ধতা ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং ৫ম প্যানেলে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও মানবাধিকার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। প্রতিটি প্যানেলে দু’জন বক্তা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।