শিক্ষক লাঞ্ছিত(!): দোষীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নয়

হাইকোর্ট

ঢাকা: নারায়নগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানসহ দোষীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না; জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসাম চৌধুরী ও বিচারপতি  মোহাম্মদ ইকবাল কবির লিটনের যুগ্ম-হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদেশে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা তদন্ত করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত।

গত ১৩ মে শুক্রবার ইসলাম নিয়ে কটুক্তি করার অপরাধে ও ছাত্রকে নির্মম প্রহার করে অজ্ঞান করার অভিযোগে জনরোষের মুখে পড়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত। বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করতে ও গণধোলাই থেকে শিক্ষককে বাঁচাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। গণধোলাই থেকে তাকে উদ্ধার করে শালিশি বিচার করেন সাংসদ সেলিম ওসমান। শিক্ষক তৎক্ষণাত অভিযোগ স্বীকার করে কানধরে ক্ষমা চায় বলে এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়।

শিক্ষকের কান ধরার ছবি ও খবর গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি সংখ্যালঘুদের পক্ষে মায়াকান্নাকারী কিছু মহল ও গণমাধ্যম। তারা সেলিম ওসমানে এ বিচারকে ‘শিক্ষক লাঞ্ছিত’ বলে প্রচার করে।

তবে সেই অপপ্রচারের জবাব দিয়ে আজ বুধবার নারায়ণগঞ্জ ক্লাব কমিউনিটি সেন্টারে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল বলেন, “জনরোষ থেকে প্রধান শিক্ষককে বাঁচাতে সেলিম ওসমান অসুস্থ শরীর নিয়েও সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন।

“কিন্তু যারা বিষয়টি না জেনে এবং জেনেও একপেশেভাবে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তাদের কাছেও প্রশ্ন, ভবিষ্যতে যদি এমন ঘটনা ঘটে তবে জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের বা রাজনীতিক অথবা কোনো সচেতন মানুষ কি নিজ দায়িত্বে সেখানে যাবেন?”

পরে সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ার পর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। সংসদ সদস্য উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠ-বস করার শাস্তি দেন।

কান ধরে ওঠবসের পর সমবেত জনতার কাছে করজোড়ে মাফ চাইতেও বাধ্য করা হয় ওই প্রধান শিক্ষককে। পরে সংসদ সদস্যের নির্দেশে প্রধান শিক্ষককে পুলিশের হেফাজতে স্কুল থেকে বের করা হয়।