রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপকভাবে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উদযাপনে ১২ দফা দাবি

Saiyidul A'iad Sharif demands 12 points in celebration

ষ্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ অর্থাৎ পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যাপক আয়োজনে ও মহাসমারোহে পালনে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপকভাবে পালনের উদ্যোগ নিতে হবে। সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বিশেষ নির্দেশনা জারী করে সারাদেশে মাসব্যাপী পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উদযাপন করতে হবে। সেজন্য এই মাসে মুসলমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বোনাস প্রদানসহ ১২ দফা দাবী বাস্তবায়ন করে রাষ্ট্রীয়ভাবে আসন্ন পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মহাসমারোহে ও ব্যাপক আয়োজনে পালন সহজ এবং সম্ভব হবে।

আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ‘ইয়াদ শরীফ উদযাপনের গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়েল ফযীলত এবং ১২ দফা দাবী বাস্তবায়নের আবশ্যকতা শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন, দৈনিক আল ইহসান এবং মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মুফতিয়ে আ’যম আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ এবং  আল্লামা মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন প্রমুখ।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব তিনি নূরে মুজাসসাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যমীনে ও মানবজাতির মধ্যে পবিত্র বিলাদত শরীফ  দান করেছেন; সেজন্যই উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। যা মাখলূকাতের জন্য ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-“হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এসেছেন মহান নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সকল ব্যাধিসমূহ দূরকারী, কুল-কায়িনাতের মহান হিদায়েত দানকারী ও ঈমানদারদের জন্য মহান রহমতস্বরূপ (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া, ইহসান ও রহমত (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে) উনার জন্য ঈদ উদযাপন তথা খুশি প্রকাশ করো। (তোমরা যতো কিছুই করোনা কেনো) যা সমগ্র কায়িনাতের জন্য সবচেয়ে বড় ও সর্বোত্তম ইবাদত মুবারক।” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি মানবজাতির প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা তথা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাকে ফরয করে দিয়েছেন। আর এ মুবারক নির্দেশ পালনার্থেই সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা সারা জীবন আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন।

আলোচকরা বলেন, স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রীয়ভাবে বঙ্গবন্ধু সর্বপ্রথম এদেশে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন শুরু করেন। সে ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত থাকলেও তা যথেষ্ট নয়। তাই আসন্ন পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মহাসমারোহে ব্যাপকভাবে পালনে ১২ দফা দাবি তুলে ধরে সেমিনারে বক্তারা বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে মানহানীকর কোন বিষয় প্রচার, প্রকাশ ও প্রদানকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড দেয়া। সেজন্য আইন প্রণয়ন করা। পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ ব্যাপকভাবে পালনে সরকারীভাবে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ করা। সকল মুসলমান কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এই মাসে বোনাস প্রদান করা। সর্বপ্রকার অশ্লীল ও অশালীন কাজ বন্ধ করা। সকল শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুমহান জীবনী মুবারক বাধ্যতামূলক করা। সরকারী-বেসরকারী সকল প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মাদরাসায় পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ দিবসে বিশেষ মীলাদ শরীফ মাহফিল ও তাবারুকের আয়োজন করা। সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ব্যাপকভাবে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনে নির্দেশনা জারী করা এবং সরকারী-বেসরকারী স্থাপনাসমূহ মনোরম সাজে সজ্জিত করা। বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা।

১২ দফা দাবী প্রসঙ্গে বক্তারা আরো বলেন, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানে ছাড় দেয়া এবং বিশেষ পণ্য সামগ্রী তৈরী করা। সর্বস্তরে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জারী করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতো স্বতন্ত্র শক্তিশালী গবেষণা কেন্দ্র এবং পৃথক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা। ১২ই শরীফ দিবসে দেশের সব মসজিদ-মাদরাসা, ইয়াতীমখানা, মাজার শরীফসহ সব গরীব, দুঃখীদের নতুন পোশাক, ওষুধ বিতরণ, নগদ অর্থ বরাদ্দ ও বিশেষ খাবার সরবরাহ করা। বিশেষ প্রতিযোগীতার আয়োজন করা। পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনে আন্তর্জাতিক উদযাপন কমিটিকে সর্বোচ্চ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা করা।