নিরাপদ রাখুন আপনার গ্যাসের চুলা

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় গ্যাসপাইপ বিস্ফোরণে একটি পরিবারের সব সদস্য দগ্ধ হওয়ার পর গ্যাসের চুলা ব্যবহাকারীদের মনে যেমন বাসা বাধ্যছে শঙ্কা তদ্রুপ সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে গ্যাস চুলা ব্যবাহারের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতন হলেও এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
অনেকেই আছেন যারা চুলা বন্ধ করেন না। দেখা যায় হয়তো চুলা জ্বালিয়েই ঘর থেকে বের হয়ে যান। এটা অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম কারণ।

এছাড়াও রান্নাঘর থেকে আরো অনেকভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ বাসার বা কর্মক্ষেত্রের চুলার আশপাশের গ্যাসলাইন লিক বা ছিদ্র হয়ে যেতে পারে। লিকটি যদি চুলার নব বা সুইচের ওপর তৈরি হয়, তাহলে কেবল নব ঘুরালে বা সুইচ অন করলেই গ্যাস বের হবে। এ সময় অবশ্যই চুলা বন্ধ রাখতে এবং দক্ষ কারিগর দিয়ে সারিয়ে নিতে হবে।

গ্যাসের চুলা ব্যবহারে সতর্কতা বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশাসন) মেজর শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘এ জাতীয় দুর্ঘটনা রোধে প্রথমেই দরকার জনসচেতনতা। আপনি যে বাড়িতে থাকছেন, বুঝতে হবে আপনি কিসের ভেতরে আছেন। আপনি যদি দেখেন, গ্যাস লিকেজের ওপর আছেন। গ্যাস বেরোলে শব্দ হবে। গ্যাসেরও একটা গন্ধ আছে। এগুলো অনুভব করুন। এসব ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম, আর চুলার ওপর কাপড় দিয়ে গেলাম—এটা যেন না করা হয়। এ জন্য পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। পরিবারের যিনি প্রধান, তার উচিত গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবহার কীভাবে করতে হবে, সেটা সম্পর্কে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা।’

তিনি বলেন, আগুন লাগলে যেমন ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়, ঠিক তেমনি গ্যাসলাইনে লিকেজ হলে তিতাস গ্যাসকে জানানো উচিত।

তিতাস গ্যাসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দুটি কারণে গ্যাসের চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এর একটি হলো পাইপের লিকেজ বা চুলার চাবি নষ্ট হয়ে গেলে। অন্যটি হচ্ছে গ্যাসের চুলা চালু করে অন্য কাজ বা এর ওপরে কাপড় শুকাতে দেওয়া। আমাদের কাজ হলো বাসার বাইরে গ্যাসের সমস্যা হলে সেটা মেরামত। কিন্তু বাসার অভ্যন্তরে চুলা স্থাপন বা পাইপ নষ্ট হলে সেটা বাসার মালিককে জানাতে হবে।’
এর বাইরে গ্যাসলাইনে কোনো ক্রটি বা জরুরি অবস্থার জন্য তিতাস গ্যাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে। তাদের জরুরি ফোন নম্বরগুলো হচ্ছে: মতিঝিল—৯৫৬৩৬৬৭, ৯৫৬৩৬৬৮ (২৪ ঘণ্টা); মিরপুর—৯০১৪২৯১ (সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা) এবং গুলশান—৯৮৯১০৫৪ (২৪ ঘণ্টা)। এ ছাড়া তিতাস গ্যাসের হটলাইন নম্বরেও যোগাযোগ করা যেতে পারে। নম্বরটি হলো: ০২-৯১০৩৯৬০।

চিকিৎসকদের পরামর্শ হলো- এ ধরনের আগুনে পোড়া রোগীদের শরীরে ১৫-২০ মিনিট ধরে বিশুদ্ধ পানি ঢালতে হবে। তা ছাড়া গ্যাস বা পেট্রলের দাহ্য ক্ষমতা বেশি থাকে। গ্যাসের চুলার নবটা ঠিক আছে কি না, এগুলো পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। রান্না শেষে গ্যাসের চুলার চাবিটা ঠিকভাবে বন্ধ করে রাখা উচিত।