৩৫ টাকার মুরগির বাচ্চা এক টাকায়ও নিচ্ছে না কেউ

নিউজ ডেস্ক : একটা ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা বিক্রি হতো ৩৫ টাকায়। সেই দাম কমতে কমতে ঠেকেছে এক টাকায়। তাও কেউ নতুন করে খামারে মুরগির বাচ্চা নিচ্ছে না। বিক্রি হচ্ছে না বিধায় প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ মুরগির বাচ্চা মেরে ফেলতে হচ্ছে কোনো কোনো হ্যাচারি প্রতিষ্ঠানকে। করোনাভাইরাসের কারণে গোটা দেশে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রভাব এভাবেই পড়েছে পোল্ট্রি শিল্পে। মুরগি, বাচ্চা, ডিম- কোনো কিছুই বেচা-কেনা যাচ্ছে না। স্বভাবতই মাথায় হাত পড়েছে এই শিল্পের ব্যবসায়ীদের।

গাজীপুর জেলার টঙ্গী কুদাবো এলাকার পোল্ট্রি খামারি সেলিনা পারভীন ১০ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে কয়েকদিন আগে তার ডিম পাড়া আড়াই হাজার মুরগি বিক্রি করেছেন। ডিমের দাম ক্রমান্বয়ে কমতে থাকায় এবং খাবারের দাম বাড়তে থাকায় তিনি মুরগিগুলো বেচে দেন। পরিস্থিতি দেখে তিনি এ ব্যবসা চালিয়ে যাবেন কি-না, সে সিদ্ধান্ত নেবেন।

সেলিনা পারভীন বলেন, আমার খামার খালি দেখে হ্যাচারি মালিকদের পক্ষ থেকে আমাকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল যে প্রতি পিস মুরগির বাচ্চার দাম নেবে এক টাকা। ৫ হাজার বাচ্চা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। আমি তাদের ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণ দেশে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাতে কতোদিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তা বলা যাচ্ছে না। এমনিতেই ১০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। আর লোকসানের ভার বাড়াতে চাই না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোর অঞ্চলের আফিল হ্যাচারি ও কাজী হ্যাচারিসহ ছোট-বড় পাঁচটি হ্যাচারিতে প্রতিদিন চার লাখ বাচ্চা উৎপাদিত হচ্ছে। প্রতিটি বাচ্চা উৎপাদনে হ্যাচারি মালিকদের খরচ হয় ৩২ টাকা। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে পোলট্রি মুরগির ব্যবসায় এক প্রকার ধস নেমেছে। হ্যাচারি থেকে খামারিরা বাচ্চা কেনা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করায় তা তাৎক্ষণিক বন্ধ করা যাচ্ছে না। এজন্য প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ মুরগির বাচ্চা মেরে ফেলতে হচ্ছে। গুজবে পোলট্রি মুরগির মাংস বিক্রিতেও ধস নেমেছে। এতে কোটি কোটি টাকার লোকসানের শিকার হ্যাচারি মালিকরা।