হামা কি না খেয়া মরে যাব বাহে?

লালমনিরহাট সংবাদদাতা: ‘পাঁচদিন ধরে কোনো কাম কাজ নাই, খালি ভ্যানখান নিয়া বসে আছি। হামার রোগের ভয় নাই, পেটের টানে বাইরে ভ্যান নিয়া আসছি। সরকার থাকি কোনো খাবার পাইনো না। হামা কি না খেয়া মরে যাম বাহে?’ কথাগুলো বলছিলেন ভ্যানচালক জহির আলী।

করোনার অজুহাতে প্রশাসনের বিধিনিষেধে এভাবেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন জহির আলী সহ আরো হাজার হাজার রিক্সাচালক ও ভ্যানচালকরা। তিনি জানান, প্রতিদিন ভ্যান চালিয়ে যা অর্থ আসে তা দিয়ে চাল, ডাল কিনে বাড়ি ফেরেন। গত ৫দিন থেকে কোনো ভাড়া না পেয়ে উপজেলার তুষভা-ারের চিড়ার মিলে বসে আছেন। দুই ছেলে দুই মেয়েসহ ৬ জনের সংসার। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান তিনি। করোনার অজুহাত দিয়ে সবকিছু বন্ধ হওয়ায় পরিবারটি এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভা-ার এলাকার ভ্যানচালক মাছুম ও আতিকুল জানান, কয়েক দিন ধরে পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে আছেন। কোনো উপার্জন নাই। মানুষ ঘর থেকে বেরায় না। ঘরে খাবার নেই। আজ যে কী খাবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না।

লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় সব দোকানপাট বন্ধ। মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ফলে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। পরিবারের খাবার জোগাতে এসব মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সরকারিভাবে কিছু পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দিলেও তা খুবই কম।

বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রায় ১০ হাজার পাথরভাঙা শ্রমিক কাজ হারিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্থলবন্দরের কাজ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের পাথরভাঙা শ্রমিক শফিকুল বলেন, প্যাট কি আর অসুখ মানে! হামার হাত দুকোনার উপরোত চলে সংসার। কাজ বন্ধ হওয়ায় খুব কষ্টে আছি।