স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি: কান নিয়ে টানাটানি, ধরা ছোঁয়ার বাইরে মাথা

নিউজ ডেস্ক: স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান ঘোষণার পর সরকার সমর্থিত লোকজন গ্রেফতার হলেও অপরাধ বিশ্লেষক ও পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এসবের পাশাপাশি আইনের আওতায় আনতে হবে পেছনের কারিগরদেরও। তাদের মতে রাঘববোয়ালদের মুখোশ উন্মোচিত করতে পারলেই মিলবে চূড়ান্ত সাফল্য।

কোভিড চিকিৎসা নিয়ে দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে গেল ১৫ জুলাই সাতক্ষীরা থেকে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. শাহেদ। ভুয়া করোনা রিপোর্ট দেয়াসহ প্রতারণা ও ফৌজদারি অপরাধের অসংখ্য অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। নিজেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য হিসেবে পরিচয় দিতেন তিনি।

১২ জুলাই গ্রেফতার হন জেকেজির চেয়ারম্যান সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। তার বিরুদ্ধেও করোনার ভুয়া রিপোর্ট প্রদাণের অভিযোগ। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক সাবরিনা সরকার সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাচিপ নেতা। ২৩ জুন একই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তার স্বামী আরিফ চৌধুরীও।

সবশেষ ২৪ জুলাই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার শারমিন জাহানকে গ্রেফতার করা হয় নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে। তিনিও এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন। ছিলেন আওয়ামী লীগের একটি উপ কমিটির সদস্য।

দলীয় পরিচয় কিংবা সামাজিক পরিচিতির তোয়াক্কা না করে এ ধরনের গ্রেফতারকে স্বাগত জানিয়ে অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, এসবের পাশাপাশি আইনের আওতায় আনতে হবে রাঘববোয়ালদেরও।

অপরাধ বিশ্লেষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন এবং প্রতারণা সেটাকে যদি একদম স্থায়ীভাবে নির্মূল করতে হয় তাহলে দুদককে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে।

স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি রোধে সরকারের উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি। তবে কিছু প্রশ্নও রাখছেন তারা।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ ধরনের অভিযান কিন্তু আংশিক হয়। এটা একধরনের বলতে গেলে কান নিয়ে টানাটানি হয় কিন্তু মাথা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। সবাইকে এই অভিযানের আওতায় আনা গেলে এটা সুফল মিলবে।

একই সঙ্গে পরোক্ষভাবে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে সুবিধা নেয়া গোষ্ঠীর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ারও তাগিদ তাদের।