সরকারকে না জানিয়ে ব্যয় করছে ৩০-৩৫ কোটি ডলার

নিউজ ডেস্ক : টেকসই উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশে কর্মরত উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে কার্যকর অংশীদারিত্ব প্রত্যাশা করছে সরকার। একইসাথে উন্নয়ন সংস্থাগুলোকেও জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে চায় সরকার।

কারণ সরকারকে না জানিয়ে এইসব উন্নয়ন সহযোগীরা এদেশে প্রতিবছর এনজিওদের মাধ্যমে ৩০ থেকে ৩৫ কোটি ডলার ব্যয় করছে। অন্যদিকে, তাদের কাছে ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আর্থিক প্যাকেজ তুলে ধরা হবে বিডিএফে।

বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ফোরামের (বিডিএফ) বৈঠকে এ বিষয়গুলো প্রাধান্য দেয়া হবে। এবারের বৈঠকটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণে উৎসর্গ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ।

আগামী ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি এই বিডিএফ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গতকাল শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি-২ সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ইআরডি সচিব এই তথ্য জানান। এ সময় আরডির অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপ সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ জানান, এবারের বাংলাদে ডেভেলপমেন্ট ফোরামের মূল শ্লোগান টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর অংশীদারিত্ব। এই ফোরামে জাইকার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনিচি ইয়ামাদা, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ভাইস (এডিবি) প্রেসিডেন্ট শিক্সিন চেনসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। এছাড়া ৩০ থেকে ৪০টি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।

ইআরডি সচিব জানান, এবারের বৈঠকে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া হবে। কেননা সরকারকে না জানিয়ে তারা প্রতিবছর ৩০ থেকে ৩৫ কোটি ডলার এ দেশে ব্যয় করেন । তারা বলে থাকেন, এনজিও ব্যুরোকে জানিয়ে তারা বরাদ্দ করা অর্থ খরচ করেন। কিন্তু এ বিষয়টি সরকারকেও জানানো উচিত। এসব বিষয় নিয়ে কথা হবে। উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে শর্তহীন চুক্তিতে ‘মিউচ্যুয়ালি’ কাজ করা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বিডিএফ বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আলোচ্যসূচিতে থাকছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইআরডি সচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে মিয়ানমার আমাদের সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছে। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে একটি রায় হয়েছে। রোহিঙ্গা আমাদের উন্নয়নের জন্য একটি চ্যালেঞ্জও বটে। তারপরও এবারের বিডিএফ-এ এই ইস্যু রাখার প্রয়োজন নেই বলেই মনে করা হয়েছে।

সচিব জানান, এবারের বিডিএফ বৈঠকে আটটি কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো হচ্ছে, প্রাইভেট সেক্টর এংগেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড ফ্যাসিলেটেশন, পার্টনারশিপ ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ইজ অব ফিনানসিং, ইনোভেটিভ ফিন্যানসিং ফর এ সেলফ-রিলায়েন্ট বাংলাদেশ, রুরাল ট্রান্সফরমেশন: ক্রিয়েটিং অপাচুনিটিজ ফর অল, হেলথ সার্ভিসেস : ইনক্লুসিভ ডেলিভারি অপশন, অ্যানার্জি সিকিউরিটি ফর সাসটেইনেবল গ্রোথ, সাসটেইনেবল সিটিজ : সার্ভিসেস অ্যান্ড প্রটেকশন ফর দ্য ভালনারেবল এবং কোয়ালিটি এডুকেশন ফর অল : প্রিপারেরিং ফর ফোরথ ইনডাসট্রিয়াল রেভ্যুলেশন।

এক প্রশ্নের জবাবে মনোয়ার আহমেদ জানান, আগে প্যারিস কনসোর্টিয়াম নামে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতো। পরে প্যারিস ডিক্লারেশন অনুযায়ী ‘লিডার অ্যান্ড ওনারশিপ’ এবং এরপর ‘লোকাল কনসালটেটিভ গ্রুপ’ ও ‘পিআরএসপি ফোরাম’ হয়ে ২০১০ সালে গঠন করা হয় বিডিএফ। এতদিন বিডিএফের ফলাফল মনিটরিং করা না হলেও এবারের বৈঠক থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হবে বলে জানান তিনি।