সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় সকল বিশ্ববিদ্যালয় রাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অবশেষে সম্মতি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। এর ফলে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে একযোগে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বুধবার ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে কমিশনে অনুষ্ঠিত এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিজ নিজ স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেই প্রথম বর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে কেন্দ্রীয় ভর্তিপরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

নানা আলোচনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-সহ বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় রাজি হওয়ার পর এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

কমিশন তাদের খসড়া প্রস্তাবনায় বলছে, কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখায় তিনদিন আলাদা আলাদা ভর্তিপরীক্ষা নেওয়া হবে। ভর্তিপরীক্ষার ফলাফল দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির কাজ শেষ হবে। পরবর্তীকালে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রচলিত পদ্ধতিতে নিজ নিজ প্রয়োজনীয় শর্তাবলী সংযোজন করে আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ভর্তিপরীক্ষায় প্রাপ্ত স্কোরকে বিবেচনা করেই ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করবে।

সভা শেষে জানানো হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ স্বতন্ত্রতা বজায় রেখে ইতোপূর্বে যেভাবে প্রথম বর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে, তার প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রেখেই ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ভর্তিপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও পঠন-পাঠন প্রক্রিয়ার ভিন্নতা সত্ত্বেও তাদের ভর্তিপরীক্ষা কেবল এইচএসসি পরীক্ষায় পঠিত বিষয়ের ভিত্তিতেই গৃহীত হয়। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর পরই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির দেওয়া সময় অনুযায়ী তাদের নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ভর্তিপরীক্ষার আয়োজন করবে।

ইউজিসি জানায়, কেন্দ্রীয় ভর্তিপরীক্ষার মাধ্যমে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের একটি স্কোর করে দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিজ্ঞ এবং সিনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখার জন্য আলাদা আলাদা তিনটি কেন্দ্রীয় ভর্তিপরীক্ষা কমিটি গঠন করা হবে। এই তিন শাখায় তিনদিন আলাদা আলাদা ভর্তিপরীক্ষা নেওয়া হবে। ভর্তিপরীক্ষার ফল প্রকাশের পর কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির কাজ শেষ হবে।

পরে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রচলিত পদ্ধতিতে (কিংবা যেভাবে তারা উপযুক্ত মনে করেন) তাদের নিজ নিজ প্রয়োজনীয় শর্তাবলী সংযোজন করে আলাদা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এবং নতুন করে আর পরীক্ষা না নিয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তিপরীক্ষায় প্রাপ্ত স্কোর বিবেচনা করেই ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করবে।

প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তিপরীক্ষার কেন্দ্র থাকবে। ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী অভিন্ন প্রশ্নে পছন্দ করা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি তাদের পরীক্ষা নেওয়ার সামর্থ্যের অতিরিক্ত আবেদন পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে মেধাক্রমানুযায়ী নিকটতম বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক কাউন্সিল/ভর্তি কমিটি ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় শর্তারোপ করার সুযোগ পাবে।

বিশেষায়িত বিভাগগুলো যেমন- স্থাপত্য, চারুকলা ও সঙ্গীত তাদের প্রয়োজনমত শুধু ব্যবহারিক পরীক্ষা নিতে পারবে। তবে সে ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় ভর্তিপরীক্ষার স্কোর সংযুক্ত করেই মেধা তালিকা তৈরি করবে।

বর্তমানে প্রচলিত ভর্তিপরীক্ষায় ভর্তিকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক ভোগান্তি এবং আর্থিক ব্যয় নিরসনের জন্য ও বিশ্বায়নের এ যুগে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে এ ধরনের কেন্দ্রীয় ভর্তিপরীক্ষা পদ্ধতি নেওয়ার উদ্যোগ যুক্তিযুক্ত কারণেই গ্রহণ করা হয়েছে হয়েছে বলে জানায় ইউজিসি।