সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও চড়া দাম

এখনো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুস্বাস্থ্য তথা জীবনধারণের জন্য সবজি অত্যন্ত দরকারি খাদ্য উপাদান। খাবারের তালিকায় অপরিহার্য এই শীতের সবজি বাজারে উঠেছে প্রচুর পরিমাণে। অর্থাৎ সরবরাহে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু বাজারে এই দরকারি পণ্য কিনতে গেলেই নাভিশ্বাস ক্রেতাদের।
বিশেষ করে, যাদের আয় বাড়েনি তারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সবজি কিনতেই পারছেন না। ক্রেতাদের অভিযোগ, সবজি দেশে উৎপাদন হয়। বাজারের দিকে তাকালে মনে হয়, উৎপাদনও ভালো। কিন্তু দামের দিকে তাকালে হতাশ হতে হয়। সবজির সরবরাহের তুলনায় দাম অন্তত তিনগুণ বেশি।

সবজির দাম কতটা বেড়েছে, তা পরিমাপ করতে হলে আপেল বা কমলার সঙ্গে তুলনা করলে কিছুটা বোঝা যাবে। কোনও কোনও সবজির দাম এসব দামি ফলের চেয়েও বেশি। বাজারে আপেল ও কমলার কেজি ১২০ টাকা। অথচ এক কেজি শিম কিনতে লাগছে ১৩০ টাকা। শুধু শিম নয়, পাকা টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। শালগম, বরবটি ও গাজর ১০০ টাকা, বেগুন ও উচ্ছে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আসা নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

রাজধানীর মগবাজারের সবজি বিক্রেতা আক্কাস আলী শিম, শালগম ও নতুন আলু বিক্রি করছেন ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। একই এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম। চাকরি করেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে। তিনি জানান, ১০০ টাকা কেজি সবজি কেনার মতো সামর্থ্য তার নেই। ফলে তিনি সবজি কেনা অনেকটা ছেড়েই দিয়েছেন। তার দাবি, সবজির দামের চেয়ে ব্রয়লার মুরগির দাম কম। যে কারণে তিনি বেশি করে মুরগি কেনেন। একই এলাকায় বসবাস করেন খায়রুল ইসলাম। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। তিনি বলেন, বেতনের টাকা দিয়ে তার সংসার চলছে না। সবজি কেনা নিয়ে প্রায়ই তাকে তার স্ত্রীর সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হতে হয় বলে জানান।

রাজধানীর সেগুন বাগিচা বাজারে দেখা গেল, শীতের আগাম সবজিতে ভরপুর। কিন্তু দাম চড়া। এ কারণে কিনতে গিয়ে স্বস্তি পাচ্ছেন না ক্রেতারা। সবজির সঙ্গে পেঁয়াজ ও আলু কিনতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন করে কোনও সবজির দাম কমেনি। আগের সপ্তাহের দামেই সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ সবজির দামই প্রতি কেজি একশ টাকার ঘরে।

মানিকনগর এলাকার সবজি বিক্রেতা রবিউল ইসলাম জানান, আগে কখনও তিনি সবজি এত চড়া দামে বিক্রি করেননি। দাম বেশি হওয়ার কারণে তাদের বেচা-বিক্রিও কমেছে বলে জানান তিনি। দাম বাড়ার বিষয়ে তিনি জানান, আড়তেই সবজির দাম বেশি। যে কারণে তারাও বেশি দামে বিক্রি করছেন। এই এলাকায় বিভিন্ন ধরনের শাক বিক্রি করেন জামাল হোসেন।

তিনি বলেন, এখন পালংশাক ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। এই শাক গত বছর ২০ টাকায় পাওয়া যেত। এভাবে লালশাক, কলমির শাক, মুলার শাক কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি। গত বছরও যেসব শাক ১০ টাকায় বিক্রি করেছি। এ বছর সেইগুলো ২৫ টাকার কমে বিক্রি করা যাচ্ছে না।