লক্ষ্মীপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১২

বিভাগীয় সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১২ নেতাকর্মী আহত হন।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মীর আক্তার হোসেন বাচ্চুর অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় কয়েকজনের হাতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উপজেলার রামগতি বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কেউই লিখিত অভিযোগ করেনি।

আহতরা হলেন, চরগাজী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, যুবদল নেতা মো. ইসমাইল, নুরুল আমিন নোমান, মাহবুবুর রহমান নয়ন, মো. হৃদয়, ছাত্রদল নেতা ফরহাদ হোসেন, আরিফ হোসেন ও বিএনপি কর্মী মো. জুয়েলসহ ১২ জন। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফুলকে নোয়াখালী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের বানী ভবানী রায় কামেশ্বরী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে থাকা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যান নেতাকর্মীরা। এসময় সাবেক এমপি নিজান ও বিএনপি নেতা বাচ্চুর সমর্থকরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। পরে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে বিদ্যালয় এলাকার বাইরে রামগতি বাজার এলাকায় আসলে বাচ্চুর সমর্থকরা নিজানের লোকজনের ওপর হামলা করেন। এতে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, আমি উপজেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু বর্তমান কমিটিতে আমাকে সদস্যও রাখা হয়নি। আশরাফ উদ্দিন নিজানের অনুসারী না হওয়ায় আমাকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সকালে প্রভাতফেরিতে গেলে আমার লোকজনের সঙ্গে নিজানের কর্মীদের হাতাহাতি হয়। এতে আমাদের পাঁচজন আহত হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিএনপির সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন নিজানের মোবাইলফোনে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তার অনুসারী রামগতি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জামাল হোসেন বলেন, বিএনপি নেতা বাচ্চু আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে দুইবার জাতীয় নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। এতে তাকে নতুন কমিটিতে রাখা হয়নি। এ কারণেই দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তিনি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছেন। এতে আমাদের সাতজন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে সাইফুলের হাত ভেঙে গেছে।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত বছরের অক্টোবর মাসে রামগতি উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে বাচ্চু সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু তাকে কোনো পদে রাখা হয়নি। এ নিয়ে তখন থেকেই উপজেলা বিএনপিতে প্রকাশ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়। নতুন কমিটিতে বিএনপির সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন নিজানের অনুসারীরাই পদ পেয়েছেন।