লক্ষ্মীপুরে বছরে ২০০ কোটি টাকার নারিকেল উৎপাদন

লক্ষ্মীপুরে বছরে ২০০ কোটি টাকার নারিকেল উৎপাদন

জাহাঙ্গীর লিটন: লক্ষ্মীপুরে চলতি মৌসুমে প্রায় ২০০ কোটি টাকার নারিকেল উৎপাদন হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত নারিকেল সুস্বাদু ও তেলের গুণগতমান ভালো হওয়ায় এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপকূলীয় এ জেলায় নারিকেল ভিত্তিক শিল্প-কারখানা স্থাপিত হলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগের পাশাপাশি গতিশীল হবে এ অঞ্চলের অর্থনীতি।

বাড়ির আঙ্গিনা, পতিত জমি ও কৃষি জমির পাশে নারিকেল গাছ লাগিয়ে বেশ লাভবান হচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের চাষিরা। দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে নারিকেলের আবাদ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য মতে, লক্ষ্মীপুরে ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে নারিকেল বাগান রয়েছে। প্রতিবছর এ জেলায় প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ নারিকেল উৎপাদন হয়। এর বর্তমান বাজার মূল্য ২০০ কোটি টাকারও বেশি। এ মৌসুমে একজোড়া নারিকেল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুরে নারিকেলের সবচেয়ে বড় হাট বসে সদর উপজেলার দালাল বাজার ও রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ বাজারে। বেচাকেনা ও ছোবড়া বের করার কাজে প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এ পণ্যটিকে ঘিরে।

রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ বাজারের নারিকেল ব্যবসায়ী শাহ আলম মাতবর জানান, তিনি ৪০ বছর ধরে নারিকেল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় চাষিরাও ভালো দাম পেয়েছেন। এখানকার উৎপাদিত নারিকেলের গুণগতমান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলায় এর ব্যাপক চাহিদার পাশাপাশি তেল কোম্পানিদেরও এখানকার নারিকেল সংগ্রহ করার আগ্রহ বেড়েছে।

সদর উপজেলার চররুহিতা গ্রামের নারিকেল ব্যবসায়ী কবির খাঁ জানান, এ অঞ্চলে নারিকেল ভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে চাষিরা যেমন ভালো দাম পেতেন, তেমনি লাভবান হতেন ব্যবসায়ীরাও।

সদর উপজেলার চররুহিতা গ্রামের নারিকেল চাষি জামাল উদ্দিন জানান, তাঁর দেড় একর জমিতে পুকুর ছিল। পুকুরের চারপাশে তিনি নারিকেল বাগান করে এখন বেশ লাভবান হচ্ছেন।

২০০ কোটি টাকারও বেশি নারিকেল উৎপাদনের কথা জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর লক্ষ্মীপুরের উপ-পরিচালক বেলাল হোসেন খাঁন বলেন, ‘এখানকার মাটি নারিকেল চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এ অঞ্চলে নারিকেল ভিত্তিক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠলে কৃষকরা যেমন লাভবান হতো, তেমনি গতিশীলতা পেতো এ অঞ্চলের অর্থনীতি।’