রোজা অবস্থায় ইনজেকশন, ইনহেলার, স্যালাইন নিলে রোজা ভাঙ্গবে

ঢাকা: রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, স্যালাইন নিলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে সম্মানিত শরীয়ত উনার ফায়সালা অনুযায়ী, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, ইনহেলার, স্যালাইন ইত্যাদি নিলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। রোযা ভঙ্গ না হওয়ার দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ হলে ‘মাজলিসু রুই্য়াতিল হিলাল’ এর উদ্যোগে “পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসের পবিত্র চাঁদ দেখার গুরুত্ব এবং রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, ইনহেলার, স্যালাইন ইত্যাদি নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ” শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিশিষ্ট চাঁদ গবেষক ও ফার্মাসিষ্ট এবিএম রুহুল হাসান এবং দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মুফতিয়ে আ’যম আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ।

সম্মানিত শরীয়তের দৃষ্টিতে রোযা অবস্থায় পাকস্থলী বা মগজে কিছু প্রবেশ করলেই রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে; তা যেভাবে এবং যে স্থান দিয়েই প্রবেশ করুক না কেন।

রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, স্যালাইন নেয়া প্রসঙ্গে আলোচকরা বলেন, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি অসুস্থ ব্যক্তির জন্য রোযার পরে ক্বাযা আদায় অথবা ফিদিয়া দেয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন, সেখানে একশ্রেণীর কথিত মুফতি ও অজ্ঞ ডাক্তার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দাবি করেছে, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, স্যালাইন, ইনহেলার নিলে রোযা ভঙ্গ হবে না। যা সম্পূর্ণ ভূল ও কবীরা গুণাহের কারণ।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট বর্ণিত রয়েছে, “উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন নিশ্চয়ই শরীরের ভিতর কিছু প্রবেশ করলে রোযা ভঙ্গ হবে। কিছু বের হলে ভঙ্গ হবে না।” (আবূ ইয়ালা শরীফ)

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক উনার পরিপ্রেক্ষিতে অনুসরণীয় সমস্ত ইমাম, মুজতাহিদ ও ফক্বীহগণ ফতওয়া দিয়েছেন যে, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, ইনুসলিন, ইনহেলার ইত্যাদি নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ। যা ফিক্বাহ’র বিশ্বখ্যাত কিতাব- ফতওয়ায়ে শামী, বাহরুর রায়িক, ফতহুল ক্বাদীর, হিদায়া, আইনুল হিদায়া, জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ ইত্যাদি কিতাবে উল্লেখ আছে।

আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, যে কোন পদ্ধতিতেই ইনজেকশন নেওয়া হোক না কেন, ইনজেকশনের ওষুধ কিছু সময়ের মধ্যে রক্তস্রোতে মিশে যায়, রক্ত এমন একটি মাধ্যম, যার সাথে সরাসরি শরীরের প্রত্যেকটি কোষ (Cell) ও কলা (Tissue)-এর সংযোগ রয়েছে। ফলে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং রক্তের মাধ্যমে তা ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে মগজে পৌঁছে যায়।

অর্থাৎ ওষুধের শোষণের কয়েক মিনিটের মধ্যেই হৃৎপিন্ড, যকৃৎ, কিডনী, মগজ এবং অন্যান্য অঙ্গে বেশীরভাগ ওষুধ চলে যায়। আর শরীয়তের বিধান হলো, রোযা অবস্থায় পাকস্থলী বা মগজে কিছু প্রবেশ করলেই রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে; তা যেভাবে এবং যে স্থান দিয়েই প্রবেশ করুক না কেন।