রিজার্ভ চুরির তদন্তে সংশ্লিষ্ট সাইবার বিশেষজ্ঞ তানভির জোহা গুম!

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে সংশ্লিষ্ট তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তানভির হাসান জোহাকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রাজধানীর কচুক্ষেত এলাকা থেকে বুধবার দিনগত রাত ১২টার দিকে তাকে অপহরণ করা হয় বলে পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি নিয়ে প্রকৃত তথ্য সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রকাশ করায় একটি মহল তার ওপর ক্ষুব্ধ বলে এর আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন জোহা।

ওই মহলটি রিজার্ভ কেলেঙ্কারির তদন্ত থেকে তাকে সরিয়ে দিতে ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ ছিলো অপহৃত জোহার।
জোহা বলেছিলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তদন্ত সহায়তা থেকে আমাকে সরিয়ে দিতে চাইছে। কারণ আমি অনেক বিষয়েই প্রশ্ন তুলেছি। তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছি।
এছাড়া রিজার্ভ কেলেঙ্কারি তদন্তে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ রাকেশ আস্থানার দেওয়া অনেক বিভ্রান্তিকর তথ্যের সঙ্গেও দ্বিমত পোষণ করেছিলেন জোহা।
সূত্র জানায়, জোহার সঙ্গে প্রথম থেকেই তথ্য ও উপাত্ত নিয়ে অমিল হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি কনসালটেন্ট রাকেশ আস্থানার সঙ্গে। এসময় জোহার অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি রাকেশ আস্থানা।

জোহার পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার অফিস থেকে বাসায় ফেরার আগে স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয় তার। এর আগে দু’দিন তিনি বাসায় ফেরেননি। এর কারণ অবশ্য জানে না তার পরিবার। অফিস থেকে বের হওয়ার পর সিএনজিতে ওঠেন জোহা। কচুক্ষেত এলাকায় দুই-তিনটি গাড়ি তার সিএনজিকে ঘিরে ধরে। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে জিডি করতে থানায় থানায় ঘুরে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও তারা অভিযোগ করেছেন।

তানভির হাসান জোহা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের ডিরেক্টর (অপারেশন)। তবে এই প্রকল্পটি গত দুই মাস ধরে স্থগিত আছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তের কাজে তাকে নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির বিষয়ে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে এ বিষয়ে বক্তব্য দিলে আইসিটি মন্ত্রণালয় প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণমাধ্যমকে জানায় সাইবার বিশেষজ্ঞ জোহার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

এরপর গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি নিয়ে প্রকৃত তথ্য সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রকাশ করায় একটি মহল আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে। তাই তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা তদন্ত সহায়তা থেকে আমাকে সরিয়ে দিতে চাইছে। কারণ আমি অনেক বিষয়েই প্রশ্ন তুলেছি। তথ্যর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার আমন্ত্রণে আমি জঙ্গি তৎপরতাসহ সাইবার অপরাধের বড় বড় ঘটনা তদন্তে সহায়তা করেছি। তখন কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। এখন একটি মহলের স্বার্থে আঘাত লাগায় তারা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে।’

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংক অনানুষ্ঠানিকভাবে জোহার সহযোগিতা নেয়। পরবর্তীতে র‌্যাব আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করার সময়েও সাইবার বিশেষজ্ঞ জোহার সহযোগিতা নেয়।

তাকে নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিভাগ ও ব্যাংক অফিস পরিদর্শন করে। সার্ভার কম্পিউটারের বিভিন্ন দিক খুটিয়ে দেখে।

উল্লেখ্য, তানভীর হাসান জোহা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের ডিরেক্টর (অপারেশন)। তবে এই প্রকল্পটি গত দুই মাস ধরে স্থগিত আছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিভার্জ থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ডলার সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তদন্তের কাজে তাকে নেওয়া হয়।