রমজানের গরুর গোস্তের বাজার নিয়ন্ত্রণে বসছেন টিপু মুনশি

গরুর গোস্ত আমদানি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে খামারিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন রোজাকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের সার্বিক বাজারমূল্যে সন্তোষ প্রকাশ করলেও গরুর গোস্তের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে কয়েক দিনের মধ্যেই দুই সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলেও জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে দুই সিটি কর্পোরেশনই পদক্ষেপ নিয়েছে। আরও পর্যালোচনার জন্য শিগগিরই তাদের সঙ্গে বসা হবে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বাণিজ্য সচিব মফিজুল ইসলাম ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘রমজানে যে কোনো মূল্যে পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। কোনো অবস্থায়ই অসাধু ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিতে চাই না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উৎসবকে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু লোক পথে পথে চাঁদাবাজি করে। এ কথা বিবেচনা করে এবার পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চিঠি দিয়েছি। এবারই প্রথম সব বিভাগীয় কমিশনারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। যে করেই হোক পথের চাঁদা বন্ধ করা হবে। কারণ যে চাঁদা আদায় করা হয় সেটা পণ্যের ওপর পড়ে। এ বিষয়ে আমরা খুব সতর্ক। তবে এখন পর্যন্ত পথে চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘উৎসবকে কেন্দ্র করে পরিবহন খরচও বাড়ানো হয়। এটা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। কারণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ সময় ট্রাক মালিকদের নৈতিকতাও কাজ করে না। আবার ঈদের সময় বাস ও লঞ্চের টিকিটেরও দাম বাড়ানো হয়। সবাই বাড়ি যেতে চায় আর এ সুযোগটা মালিকরা নিতে চান। রমজান উপলক্ষে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সত্যিই কঠিন। এরপরও আমরা যদি সতর্ক থাকি তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’

রোজায় পণ্য কেনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘শবে বরাতের দিন থেকেই ক্রেতারা মনে করে পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে তাই বেশি বেশি পণ্য কেনা শুরু করেন। সবাই একসঙ্গে অনেক পণ্য কেনার ফলে চাহিদাও বেড়ে যায়। আমরা যদি একটু রয়েসয়ে পণ্য কিনি তাহলে এ সমস্যা হয় না। আমরা সব সময়ই বলছি রোজায় যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে যেমন- ছোলা, ডাল, পেঁয়াজ এসবের মজুত প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি রয়েছে। তাই দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।’

তিনি আরও বলেন, রোজার পরে এসব পণ্যের দাম আরও কমে যাবে এটা আরও বেশি বেশি করে গণমাধ্যমকে প্রচার করার অনুরোধ জানান তিনি। দোকানে পণ্যমূল্য ঝুলিয়ে না রাখার কারণে জরিমানা করা হচ্ছে। এগুলো নিয়মিত মনিটর করা দরকার। কিন্তু আমাদের সে পরিমাণ জনবল নেই। তবে জনবল বাড়ছে। আগামীতে এগুলো নিয়মিত মনিটর করা সম্ভব হবে।

রোজায় সার্বিক বাজার মূল্যের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার অধিকাংশ পণ্যের দাম কম। চালের দাম কম হওয়ায় কৃষক ক্ষতির মুখে পড়ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে চিনির উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় চিনির দাম এবং কোথাও কোথাও পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে।’

বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে টিপু মুনশি বলেন, ‘মনিটরিংয়ের সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও বাজার মনিটর করবে। কোনো ব্যবসায়ী রমজানকে কেন্দ্র করে কোন সুযোগ নিচ্ছে কিনা সে বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে। সার্বিকভাবে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি।’