যে কাজই দেয়া হয় শুধু সমীক্ষা আর সমীক্ষা -ওবায়দুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) শুধু সমীক্ষা আর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্যে ঘুরপাক খায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘যে কাজই দেওয়া হয় শুধু সমীক্ষা আর সমীক্ষা। কাজ হতে দেখি না। র‌্যাপিড পাস আর ক্লিয়ারিং হাউসের কাজের দ্বিতীয় পর্যায়ও একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি নেই।

মঙ্গলবার ডিটিসিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, বলতে গেলে এ নগরীতে ফুটপাথ নেই। পথচারীদের হাঁটার জন্য যে ফুটপাথ, সেটা বেদখলে। ঢাকা সিটি কলেজ থেকে সাতমসজিদ রোড হয়ে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর মোড় পর্যন্ত পথচারীবান্ধব একটি ফুটপাথ নির্মাণের উদ্যোগটি এখনও সমীক্ষা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ। কবে শেষ হবে সমীক্ষা, কখন প্রকল্প নেওয়া হবে, আর কখন কাজ হবে জানি না। ডিটিসিএ শুধু সমীক্ষা আর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্যে ঘুরপাক খায়। যে কাজই দেওয়া হয় শুধু সমীক্ষা আর সমীক্ষা। কাজ হতে দেখি না।

তিনি বলেন, র‌্যাপিড পাস আর ক্লিয়ারিং হাউসের কাজের দ্বিতীয় পর্যায়ও একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি নেই। র‌্যাপিড পাস উদ্বোধন করেছিলাম, কিন্তু কার্যকারিতা দেখছি না। তখন তো বলা হয়েছিল রুটে সবাই এ কার্ড ব্যবহার করবে। তাহলে এখন করছে না কেন? নিশ্চয়ই আপনাদের পরিকল্পনা জনবান্ধব ও যাত্রী বান্ধব ছিল না যতটা প্রত্যাশা ছিল।’

মন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসন ও গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায় কাজ করছে ডিটিসিএ। শুরুর দিকে এটি ডিটিসিবি বা একটি বোর্ডের আওতায় পরিচালিত হতো। পরবর্তীতে সরকার আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ডিটিসিএ গঠন করে। জনবহুল এবং ক্রমবর্ধমান ঢাকা মহানগরীর যানবাহন ব্যবস্থাপনায় ডিটিসিএর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে এ প্রতিষ্ঠানের জনবল বাড়ানো হয়েছে।’

কাদের বলেন, আমি প্রথমেই সমন্বয়ের কথা বলতে চাই। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় সড়ক উন্নয়ন ও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি প্রকল্প যেন আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ‘সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা’র (আরএসটিপি) সঙ্গে সমন্বয় করে করা হয়। কোনও একটি প্রকল্প যদি আরএসটিপি সঙ্গে সমন্বিত না হয় তাহলে নগরবাসীর উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।’

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর যানজট ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু। দীর্ঘদিন থেকে ডিটিসিএ কাজ করছে রুট রেশনালাইজেশন এর জন্য। বাসগুলোকে কোম্পানিতে রূপান্তরের মাধ্যমে পরিচালনা করার প্রথম আলোচনা শুরু হয় মেয়র আনিসুল হকের সময়। এরপর দায়িত্ব দেওয়া হয় সাঈদ খোকন সাহেবকে। কিন্তু কতদূর এগুলো? নগরবাসী তো এখনও কিছু দেখতে পেল না। কয়টি সভা হল, সেটা বিষয় নয়, বিষয় হচ্ছে উদ্যোগটাকে দৃশ্যমান করা।

কাদের বলেন, বোর্ড সভায় নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের জন্য পরিবহন মাস্টার প্ল্যান করার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেটাও এখন পর্যন্ত ডিপিইসি সভায় আটকে আছে। চট্টগ্রামের পরিবহন মাস্টার প্ল্যানও বলার মতো নোও অগ্রগতি নেই। একটি কাজ শুরু করলেন, কিন্তু শেষ করতে না পারলে এর সফলতা কোথায়? চট্টগ্রাম মেট্রোরেল চালুর বিষয়ে অর্থায়নকারী সংস্থা নির্বাচনে ইআরডির প্রতি আমি আহ্বান জানাচ্ছি। এ কাজটি আমাদের দ্রুত এগিয়ে নেওয়া দরকার।