যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ যাজকের হাতে নির্যাতিত হাজারো শিশু

ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন গির্জার তিন শতাধিক যাজকের হাতে সম্ভ্রমহরণ, নিপীড়নসহ নানাভাবে এক হাজারের বেশি শিশু যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছে। ছেলে-মেয়ে কোনো শিশুই বাদ যায়নি এ নিপীড়ন থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড জুরির প্রতিবেদনে যাজকের হাতে শিশু নিপীড়নের এ ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন, ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গ্র্যান্ড জুরির এক প্রতিবেদনে এ ভয়াবহতার চিত্র উঠে এসেছে। ক্যাথলিক চার্চের ঘটনাগুলো গোপন করার প্রবণতা নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন গ্র্যান্ড জুরি।
গ্র্যান্ড জুরির প্রতিবেদনে জানানো হয়, পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের তিন শতাধিক যাজক সাত দশক ধরে এক হাজারের বেশি শিশুকে নির্যাতন করেছে। দিনের পর দিন এসব ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছে ক্যাথলিক চার্চ। প্রায় ৯০০ পৃষ্ঠার এই তদন্ত প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ক্যাথলিক চার্চে নিপীড়নের সবচেয়ে বড় ঘটনা।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ক্যাথলিক চার্চে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে এর আগেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তবে এত পরিমাণে কোথাও হয়নি। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি শিশু নির্যাতনের প্রকৃত সংখ্যাটা আরো বেশি। অনেকের রেকর্ড হারিয়ে গেছে বা অনেকে এসব নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আনেনি। তাদের এই কর্মকান্ড গোপন করেছিল অন্যান্য যাজকরা। দশকের পর দশক ধরে তারা এই কাজ করেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নতুন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দুজন যাজকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে একজন দোষ স্বীকার করেছে। যেসব যাজকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বেশির ভাগই মারা গেছে। কিছু নির্যাতনের ঘটনা এত পুরোনো যে তা বিচার করা যাচ্ছে না। গির্জাগুলোর পাঁচ লাখ পৃষ্ঠার সংরক্ষিত তথ্য ঘেঁটে গ্র্যান্ড জুরি দুই বছর ধরে এই ঘটনা তদন্ত করে। এসব তথ্য ঘেঁটে পাওয়া যায়, তিন শতাধিক যাজকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। এতে ভুক্তভোগী এক হাজারের বেশি শিশুকে চিহ্নিত করা যায়। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও বেশি হবে বলে অনুমান করছে গ্র্যান্ড জুরি। ধারণা করা হচ্ছে, অনেক শিশুর রেকর্ড হারিয়ে গেছে বা অনেকে ভয়েই অভিযোগ করেনি। গ্র্যান্ড জুরি বলেছে, ভুক্তভোগী শিশুদের অনেকে সারা জীবন শারীরিক ও মানসিক আঘাতের জের রয়ে গেছে। কেউ কেউ মাদক ও অ্যালকোহলে আসক্ত হয়েছে। কেউবা আত্মহত্যা করেছে।