মোকাব্বিরকে শোকজ করলো গণফোরাম

নিউজ  ডেস্ক: দলের লক্ষ্য, আদর্শ, নীতি, গঠনতন্ত্র, কর্মসূচী পরিপন্থী কাজের জন্য মোকাব্বির খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে গণফোরাম। দলের গঠনতন্ত্রের ৮ম ধারা মোতাবেক এই ব্যাবস্থা নেয়া হলো।

তিনি গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসন থেকে গণফোরামের দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়ে, দল এবং জোটের সিদ্ধান্ত ছাড়াই শপথ নিয়ে সংসদে গেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় গণফোরামের পক্ষ থেকে খবরটি নিশ্চিত করা হয়।

এদিকে শনিবার ছিলে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের জন্মদিন। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি সভা ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে শুরু হয়। সভার শুরুতেই দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

তারপর একে একে বিভিন্ন সংগঠন ও নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা ড. কামাল হোসেনের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও তার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রসংশা করেন। জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

সভায় সাধারণ সম্পাদক তার রিপোর্টে বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে অনেক প্রশ্ন ও সন্দেহ থাকা সত্বেও দেশের বৃহত্তর স্বার্থের কথা চিন্তা করে, অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু সরকার ৩০ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠিত নির্বাচন পুলিশ ও প্রশাসনের সহায়তায় ২৯ ডিসেম্বরের রাতেই সম্পন্ন করে।

চরম রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে বিরোধী দলকে নির্বাচনের মাঠে নামতে না দিয়ে, পোস্টার প্রচারপত্র বিলি করতে না দিয়ে, ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট ঢুকতে না দিয়ে এবং ভোটারদের ভোট দিতে না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সেই নির্বাচনকে প্রত্যাখান করে গণশুনানী অনুষ্ঠান, প্রতিবাদ সভা-মানববন্ধন সহ নানা কর্মসূচী গ্রহণ করে, যা অব্যাহত আছে।

৩০ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠিত প্রহসনের সংসদ নির্বাচনের কারণে বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর জনগণের চরম অনাস্থা সৃষ্টি হয়। তার প্রমাণ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তর ও সাম্প্রতিক অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন। সরকার শত চেষ্টা করেও জনগণকে ভোট কেন্দ্রে নিতে পারেনি, যা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য অশনিসংকেত।

দেশে চলছে চরম রাজনৈতিক হয়রানি, সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠানে করছে নানা রকম বাধা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রদান। চলছে ডিজিটাল আইনের চরম অপপ্রয়োগ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো লুটপাট ও অব্যাবস্থার কারণে দেওলিয়া প্রায়, পুঁজি পাচারের ক্ষত বেড়েই চলছে, শেয়ার বাজার ধ্বংস প্রায়, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার চরম অবনতি, প্রতিকার বিহীনভাবে বেড়ে চলছে শ্লীলতাহানী, নারী ও শিশু নির্যাতন।

সমাপনি বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, গণতন্ত্র আইনের শাসন প্রশাসনিক জবাবদিহিতা সামাজিক মূল্যবোধ বাস্তবায়নে শক্তিশালী গণফোরামের বিকল্প নেই। দলের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন ও ২৬ এপ্রিল বিশেষ কাউন্সিল সফল করার আহ্বান জানান।