মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার, দেশীয় পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি এবং বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে একথা বলেন।

ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতগণের প্রতি স্বাগতিক দেশগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি ও বিনিয়োগ বাড়াতে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যে চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে রাষ্ট্রদূতদের প্রতি তাদের কূটনৈতিক দক্ষতা কাজে লাগিয়ে প্রতিবেশী ও অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর মধ্যে যে কোনও ভুল বোঝাবুঝির মীমাংসার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে ধরনের পরিস্থিতিতে বৈদেশিক সম্পর্ক জোরদার হবে। তবে তা হতে হবে সংলাপের মাধ্যমে।

প্রধানমন্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সফরে সোমবার রাতে সাংরিলা হোটেলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, কাজ করার সময় মনে রাখতে হবে, বিশ্বটাকে এখন ‘বৈশ্বিক পল্লি’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সবাই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। তাই প্রত্যেককে একে অপরের প্রতি সহযোগিতা বাড়ানোর মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা সংরক্ষু, সেই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সর্বাধিক রেমিট্যান্স প্রেরণের কথা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা প্রায়ই প্রতারণার শিকার হয়। তাদের প্রত্যেকেরই নিরাপত্তার জন্য সম্মিলিত ও সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে।’ বিদেশে চাকরিপ্রার্থী কোনও ব্যক্তি যেন প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য ব্যাপক প্রচারণার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিদেশে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে সরকারি রেটের বাইরে অন্য কোনও ধরনের চার্জ গ্রহণ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য ব্যাপকভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে। সরকার তাদের কল্যাণে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রবাসীরা বাণিজ্যের জন্যও সেখান থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের জন্য যে পররাষ্ট্রনীতি রেখে গেছেন তার মূল কথা হলো ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’। দেশের অর্থনীতিকে এক সময় বিদেশিদের ঋণের ওপর নির্ভর করতে হতো। এ অবস্থা থেকে অর্থনীতিকে নতুন মর্যাদায় উন্নীত করতে দেশের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সরকার এখন ব্লু ইকোনমি নিয়ে কাজ করছে। পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। বাংলাদেশ আগের অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছে। এখন আমরা কোনও ঋণদাতাকে ডাকি না। বরং আমরা ‘উন্নয়ন অংশীদার’ চাই।

‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। আমরা পেয়েছি নিজেদের আত্মপরিচয় ও পাসপোর্ট। মুজিববর্ষ উদযাপনের সুযোগ পাওয়া আমাদের জন্য একটি বিশাল সৌভাগ্যের বিষয়। এ উপলক্ষে বাংলাদেশে অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে। পাশাপাশি বিদেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতরা কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।’