রাজাকার মীর কাসেমের ফাঁসি বহাল

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকাঃ মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামাত নেতা মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারক এসকে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ-১ এ রায় বহাল রাখে।

বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেনন্ডসৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মির্জা হোসেইন হায়দার ও মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আপিল শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এসএম শাহজাহান সমাপনী বক্তব্য দেন। দু’পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত মীর কাসেম আলীর মামলার আপিলের রায়ের জন্য ২ মার্চ দিন নির্ধারণ করলেও পরে তা পরিবর্তন করে ৮ মার্চ রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন।

মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালীন চট্টগ্রামে মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৪টি অভিযোগ এনেছিল প্রসিকিউশন। এর মধ্যে ১০টি অভিযোগ ‘সন্দেহাতিতভাবে’ প্রমাণিত হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনালের রায় দেয়। প্রমাণিত হওয়া অভিযোগগুলোর মধ্যে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে।

এর মধ্যে ১১ নম্বর অভিযোগে তিন বিচারক মীর কাসেমকে সর্বসম্মতভাবে দোষীসাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ সাজার রায় দেন। তবে ১২ নম্বর অভিযোগের ক্ষেত্রে এক বিচারক আসামিকে খালাস দেয়ার পক্ষে মত দেয়ায় ফাঁসির রায় আসে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে।

সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০ ও ১৪ নম্বর অভিযোগের সবগুলোতেই অপহরণ করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে। এর মধ্যে ২ নম্বর অভিযোগে মীর কাসেমকে ২০ বছর, ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর এবং বাকি ছয় অভিযোগের প্রত্যেকটিতে সাত বছর করে কারাদন্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। আর ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগে মীর কাসেমের সংশ্লিষ্টতা প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে না পারায় ট্রাইব্যুনাল এসব অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেফতার করা হয় মীর কাসেমকে। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার বিচার কার্যক্রম।

২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। পরে ৩০ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন মীর কাসেম। আপিলে তিনি সাজা বাতিলপূর্বক খালাস চান। ওই আপিলের ওপর ৯ ফেব্রুয়ারি শুনানি শুরুর পর সাত কার্যদিবস দু’পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনেন আদালত। এরপর ৮ মার্চ আপিলের রায়ের দিন নির্ধারণ করে সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ।