মিয়ানমারে ভয়াবহ বায়ুদূষণ: এক-চতুর্থাংশ মৃত্যু কারণ পরিবেশদূষণ

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ডেস্ক: সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে বায়ুদূষণের মাত্রা সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে দেশটিতে অকালমৃত্যুর হার অনেক বেড়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বিশ্বস্বাস্থ্যের অভিভাবক সংস্থাটি সরকার ও জনগণ উভয়কেই পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। খবর মিয়ানমার টাইমস।

ডব্লিউএইচওর মতে, মিয়ানমারে পরিবেশগত সমস্যার ক্ষেত্রে বায়ুদূষণ অনেকাংশে দায়ী। সম্প্রতি এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডব্লিউএইচও। এতে দেখা গেছে, জীবনধারণ ও কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের কারণে মিয়ানমারে হাজার হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। গত এক বছরে দেশটিতে পরিবেশগত কারণে ১ লাখ ৯ হাজার ২৩৫ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। আনুপাতিক বিচারে প্রতি চারটির মধ্যে একটি মৃত্যুর ক্ষেত্রে দূষিত পরিবেশ দায়ী।

পরিবেশের কারণে জনজীবন মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে, এমন দেশগুলোকে নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করেছে ডব্লিউএইচও। এ তালিকায় মিয়ানমারকে শীর্ষ বিশে অবস্থান করতে দেখা গেছে। দেশটিতে প্রাণঘাতী রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে পরিবেশগত যেসব বিষয় সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে, সেগুলো হলো বায়ু, পানি ও মাটিদূষণ, রাসায়নিক বর্জ্য নিঃসরণ, অতিবেগুনি রশ্মি বিকিরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন।

ডব্লিউএইচওর মিয়ানমার প্রতিনিধি ড. জর্জ লুনা অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণকে এজন্য বিশেষভাবে দায়ী করেছে। সে বলেছে, ‘অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে যতজন মারা যায়, তার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই এ ধরনের বায়ুদূষণের শিকার।

সে বলেছে, পরোক্ষ ধূমপানের বিষয়টি বিশেষভাবে উলেøখ করে বলেছে, এটি মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ, হৃদরোগ, ক্যান্সার ও দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম উৎস। পরোক্ষ ধূমপান নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি টোটকাও দিয়েছে সে। আর তা হলো তামাকবিরোধী আইন প্রণয়ন করা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রান্না ও আলো জ্বালানোর মতো গৃহস্থালি কাজে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রদাহ, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট ও হূদরোগের ঝুঁকি অনেকখানি কমে যাবে।’ ডব্লিউএইচও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোকে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে বলেছে, যেখানে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা অনেক কম থাকে।

ডব্লিউএইচওর জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ-বিষয়ক পরিচালক ড. মারিয়া নেইরা বলেছে, ‘এসব পদক্ষেপ গ্রহণের কিছু আর্থিক সুবিধাও রয়েছে। এটি এক ধরনের বিনিয়োগ, যা স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দেবে।’ এদিকে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ড. মার্গারেট চ্যান বলেছে, ব্যক্তিপর্যায়ে ও সরকারিভাবে পদক্ষেপগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।