মিয়ানমারকে বয়কটের ডাক ৩০ মানবাধিকার সংস্থার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  : সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বৈশ্বিকভাবে মিয়ানমারকে বয়কটের ডাক দিয়ে এক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিশ্বের ১০ দেশের ৩০টি মানবাধিকার সংস্থা। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়েরকৃত মামলার শুনানি শুরুর একদিন আগে সোমবার বৈশ্বিক এই বয়কটের ডাক দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

এই মামলায় মিয়ানমারের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য রোববার দ্য হেগে পৌঁছেছেন দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চি। রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে গত নভেম্বরে গাম্বিয়ার দায়েরকৃত এই মামলার শুনানি ১০ ডিসেম্বর শুরু হয়ে চলবে তিনদিন।

অং সান সু চির কার্যালয় আমস্টারডামের চিফল বিমানবন্দরে তার পৌঁছানোর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছে। এতে দেখা যায়, নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। পরে সেখান থেকে হেগের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন সে।

রোহিঙ্গাদের একাধিক প্রবাসী গোষ্ঠী হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার মামলার শুনানি চলাকালে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছে। মিয়ানমার সরকারের সমর্থনেও সেখানে সমাবেশের পরিকল্পনা করছেন মিয়ানমারের নাগরিকরা।

বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যার অভিযোগ এনে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত সামরিক অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। সামরিক বাহিনীর জ্বালাও-পোড়াও, খুন, ধর্ষণের মুখে ৭ লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। জাতিসংঘ মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এই অভিযান গণহত্যার অভিপ্রায়ে পরিচালনা করেছে বলে মন্তব্য করেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানি শুরুর আগে জাতিসংঘের ১৬ সদস্যের বিচারক প্যানেলকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় অস্থায়ী ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাবে সংস্থাটি।

রোহিঙ্গা মানবাধিকার সংগঠন দ্য ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন এক বিবৃতিতে বিশ্বের ১০টি দেশের ৩০টি মানবাধিকার সংস্থা একযোগে মিয়ানমারকে বয়কটের এই কর্মসূচি শুরু করেছে বলে জানিয়েছে। বিবৃতিতে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা, বিদেশি বিনিয়োগকারী, পেশাদার এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনকে মিয়ানমারের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

দ্য ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন বলছে, এই বয়কটের উদ্দেশ্য মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি এবং সামরিক বাহিনী নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ওপর অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক চাপ তৈরি করা।

সূত্র : রয়টার্স।