মানবপাচার মামলায় জামিন পাওয়া শিশু আলাউদ্দিন নয় রফিকুল ইসলাম

গ্রাম পুলিশদের গ্রেডে বেতন-ভাতা দেয়ার রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ২৭ অক্টোবর হাইকোর্ট থেকে মানবপাচার মামলায় জামিন নেয়া শিশু প্রকৃত আলাউদ্দিন নয়। কোর্টে হাজির হওয়া শিশুটির নাম রফিকুল ইসলাম প্রকাশ জয়নাল উদ্দিন। সে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া এতিম খানার প্রাক্তন ছাত্র। তার বড় ভাই মানবপাচারকারী আলাউদ্দিন সেজে কোর্টকে বোকা বানিয়ে জামিন নিয়েছে সে। এরপর থেকে আদালত পাড়ায় বিষয়টি নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেছে। রফিকুল ইসলামের গ্রাম রামুতেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘মানবপাচার মামলায় জামিন পেল সেই শিশু আলাউদ্দিন’ শিরোনামে ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ হলে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মানবপাচার মামলার আসামী আলাউদ্দিন হলেন রামু উপজেলার চাকমারকুল ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের শাহামদেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত মো. ইলিয়াছের পুত্র।

স্থানীয় সার্ভেয়ার সরওয়ার কামাল বলছেন, মানপাচার মামলার পর এলাকারবাসি তোপের মুখে পড়ে কাগজপত্র জালিয়তির মাধ্যমে ঘরবাড়ি বিক্রি করে আত্মগোপনে চলে যান আলাউদ্দিন ও তার পরিবার। বহুল আলোচিত মানবপাচারকারি ঢাকাইয়া কাদেরের সহযোগিতায় তার মা রিজিয়া বেগম প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে হাইকোর্ট থেকে পুত্র রফিককে দিয়ে আত্মগোপনে থাকা আলাউদ্দিনের জামিন নেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মানবপাচার মামলার আসামী আলাউদ্দিনের বয়স আদালতের নথিতে ২২ বছর লিপিদ্ধ রয়েছে। কিন্তু আদালতকে ভুলবুঝিয়ে ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে শিশু হিসেবে তার ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম প্রকাশ জয়নালকে প্রক্সির মাধ্যমে আদালত থেকে জামিন নেন আলাউদ্দিন। জামিনের পর ছবি সম্বলিত সংবাদ প্রকাশ হলে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। সংবাদে প্রকাশিত ছবি নিয়ে সামাজিক গণমাধ্যমে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে। তোলপাড় সৃষ্টি করা ছবিতে প্রক্সি দাতা কে এই যুবক? মানবপাচারকারী আলাউদ্দিন না অন্য কেউ! এতে দেখা যায় আদালতে দেখানো শিশু রফিকুল ইসলাম প্রকাশ জয়নাল মানবপাচারকারী আলাউদ্দিনের ছোট ভাই। তার প্রমাণ মিলে আদালতে প্রদর্শন করা কাগজ পত্রের দপ্তরগুলোতে গিয়ে। তার মধ্যে রয়েছে স্থানীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদানকৃত ওয়ারিশ সনদ, রামু ভূমি অফিস কর্তৃক প্রদানকৃত নামজারী খতিয়ান, কক্সবাজার বাইতুশ শরফ জাব্বারিয়া এতিম খানায় ভর্তি কাগজপত্র ও স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং মসজিদের ইমামের দেওয়া প্রত্যায়ন ও এলাকারবাসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সে রফিকুল ইসলাম প্রকাশ জয়নাল।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ অক্টোবর নারী ও শিশু নিযার্তন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-২, চট্টগ্রাম আদালতে মানবপাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন নুরুল ইসলাম। যার পিটিশন মামলা নং-১৮/২০১৮ইং। মামলায় মানবপাচারকারী গডফাদার আব্দুল কাদেরকে প্রধান আসামী করে তার সহযোগী আলাউদ্দিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন লোহাগড়ার উজারভিটা এলাকার মৃত আব্দুল গণির পুত্র নুরুল ইসলাম।