মাদক মামলা নিয়ে কাটছে অনিশ্চয়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী হওয়ায় বি-বাড়িয়া জেলায় হাত বাড়ালেই মেলে মাদক। সীমান্তের কাঁটাতার ভেদ করে আসা এসব মাদকদ্রব্য চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। মূলত জেলার বিজয়নগর, আখাউড়া ও কসবা উপজেলার সীমান্ত দিয়েই ভারত থেকে মাদক ঢোকে প্রতিনিয়ত। লকডাউনের এই সময়েও থেমে নেই মাদক কারবারিরা। প্রায় প্রতিদিনই জেলার কোথাও না কোথাও মাদক উদ্ধার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

মাদক উদ্ধারের প্রতিটি ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হলেও সাক্ষীরা যথাসময়ে আদালতে হাজির না হওয়ায় এবং সাক্ষ্য না দেয়ায় দীর্ঘদিন ঝুলে থাকে মামলার বিচার কাজ। অনেক মামলা আবার সাক্ষীর অভাবে নিষ্পত্তিও হয়ে যায়। এছাড়া মাদক উদ্ধার অভিযানে গিয়ে ‘মাদক গায়েব’ করার অভিযোগও থাকে অভিযানে অংশ নেয়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। সবকিছু মিলিয়ে মাদক উদ্ধার ও মামলার সাক্ষী নিয়ে উভয় সংকটে পড়তে হয় পুলিশ সদস্যদের।

তবে এবার মাদক উদ্ধার অভিযানে স্বচ্ছতা আনার পাশাপাশি সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে দেশে প্রথমবারের মতো ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছে বি-বাড়িয়া জেলা পুলিশ। উদ্ধার অভিযান নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে এবং সাক্ষীরা যেন আদালতে গিয়ে সাক্ষ্য দিতে পিছু না হটেন সেজন্য ঘটনাস্থল থেকেই উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের সচিত্র ও সাক্ষীদের শনাক্ত করছে পুলিশ। এর ফলে ঘটনাস্থলে ছিলেন না বা মাদক উদ্ধার সম্পর্কে কিছুই জানেন না এমন কথা আর বলতে পারবেন না সাক্ষীরা। সবকিছু ঠিক থাকলে জুলাই মাস থেকেই জেলার ৯ থানায় দায়ের হওয়া মাদক মামলার নথিপত্রের সঙ্গে সচিত্র আদালতে জমা দেবে পুলিশ।

জেলা পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, গত জানুয়ারি মাসে জেলার ৯ থানায় দায়ের হওয়া ১৭৩টি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ২২৬ জন মাদক কারবারি। ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩৫টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ১৯৬ জনকে। মার্চ মাসে দায়ের হয়েছে ১১৯টি মামলা, এসব মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ১৭৩ জন। এপ্রিল মাসে ৬১টি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১০৯ জনকে। এছাড়া মে মাসে দায়ের হওয়া ১৩৬টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ১৯১ জনকে।

মাদক উদ্ধার অভিযান নিয়ে বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয় অভিযানে অংশ নেয়া পুলিশ সদস্যদের। এছাড়া সাক্ষী নিয়েও দুশ্চিন্তা থাকে। এসবের স্থায়ী সমাধান খুঁজতে উদ্যোগী হয় জেলা পুলিশ। সমাধান হিসেবে মাস দুয়েক ধরে উদ্ধার অভিযানের ঘটনাস্থলের চিত্র ধারণের পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে সাক্ষীদের শনাক্ত করা হচ্ছে